Potato farmer suicide: অকাল বৃষ্টির জেরে নষ্ট হয়েছে ২ বিঘে আলুর বীজ, লোকসানের আশঙ্কায় আত্মঘাতী কৃষক

গত দুদিনের বৃষ্টিতে রাজ্যে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই এবছর এখনও সেরকম শীত না পড়ার কারণে আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। তার ওপর বৃষ্টির ফলে আলু চাষ আরও পিছিয়ে গিয়েছে। তাছাড়া জল জমে যাওয়ার ফলে বিঘের পর বিঘে জমিতে আলুর বীজ পচে নষ্ট হয়েছে। সেরকমই আলুর বীজ পচে নষ্ট হওয়ার ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় অবসাদে আত্মঘাতী হলেন এক আলু চাষি। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার নিমদহ পঞ্চায়েতের ছাতনী উত্তরপাড়া এলাকায়। ওই কৃষকের নাম রূপ সনাতন ঘোষ। আজ শনিবার তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: আবার বাড়তে চলেছে আলুর দাম, ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে চাপ বাড়বে মধ্যবিত্তের উপর

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবারের মতো এবারও জমিতে আলু চাষ করেছিলেন ওই চাষি। আলুর বীজ কেনার জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছিল তার। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা দুদিনের বৃষ্টির পর থেকেই দুশ্চিন্তার মধ্যেই ছিলেন ওই চাষি। শুক্রবার দুপুর থেকে তিনি খাওয়া দাওয়া করেননি। বন্ধুবান্ধবদের কাছেও আলুচাষ নিয়ে আশঙ্কা করেছিলেন, তার প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে। রাতেও তিনি খাবার খাননি। এরপর সকালে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি আম গাছে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। তড়িঘড়ি থাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কায় মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। এবার তিনি দু বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। টানা বৃষ্টিতে তার আলুর জমিতে জল দাঁড়িয়েছিল। এবার তিনি দামি বীজ কিনেছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে। আর গত দুদিনের বৃষ্টিতে সেই সমস্ত বীজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা করে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন তিনি।  আজ শনিবার মৃতদেহ উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। এই ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নামে। 

প্রসঙ্গত,অগ্রহায়ণ মাসে অকাল বৃষ্টির জেরে নষ্ট হয়েছে বিঘের পর বিঘে আলুর বীজ। এই অবস্থায় আগামীদিনে উৎপাদনে বড় ঘাটতি তৈরি হবে। আর হিম ঘরে থাকা আলু এখনই বের করতে চাইছেন না মজুতদাররা। ফলে বাজারে আলুর অভাব তৈরি হয়েছে। তাই দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, আগেই আলুর বীজের কালোবাজারির ছবি সামনে এসেছে। সেক্ষেত্রে আলুর বীজ বস্তা প্রতি ২২০০ টাকা আবার চন্দ্রমুখী আলুর বীজ বস্তা প্রতি ৩২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে সেই দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। চন্দ্রমুখী আলুর বীজের দাম এখন ১৮০০ টাকা বস্তা এবং জ্যোতি আলুর দাম ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।