ধান বাঁচানোর চেষ্টায় মাঠে নামলেন ‘চাষার ব্যাটা’, অন্য ভূমিকায় বিধায়ক

সাধারণত রাজনীতির ময়দানে নেমেই লড়াই করতে দেখা যায় বিধায়কদের। তবে তৃণমূলের এক বিধায়ককে দেখা গেল অন্য রূপে। নিজের জমির ধান বাঁচাতে মাঠে নামলেন বিধায়ক। শুধু তাই নয়, নিজেই ধান কাটলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি। আসলে গত দুদিন ধরে নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছিল তাঁর পাকা ধানের জমিতে। সেই জমিতে নেমেই ধান করলেন বিধায়ক। বিধায়কের এমন ভূমিকায় লোকমুখে অনেক কথা শোনা গেলেও বিধায়কের স্পষ্ট জবাব, তিনি চাষার ব্যাটা। বিধায়ক হয়ে ভাতা পান ঠিকই। তবে তিনি একজন চাষি তাই চাষ ভুলে যেতে পারবেন না।

আরও পড়ুন: ধান ক্রয় কেন্দ্রে ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত, খোলা বাজারেই বিক্রি করছেন চাষিরা

গত দুদিনের বৃষ্টিতে রাজ্যের একাধিক এলাকায় বিঘের পর বিঘে জমিতে ধান এবং আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে রকমই বিধায়কের জমিতে পাকা ধান ছিল। জল জমে যাওয়ায় ধান নষ্ট হতে দেখে তিনি নিজেকে আটকাতে পারেননি। তাই ধান বাঁচানোর চেষ্টায় তিনি একজন চাষির ভূমিকা পালন করেন। প্রসঙ্গত, অকাল বৃষ্টিতে রাজ্যের একাধিক এলাকা বিশেষ করে দামোদর এলাকার ধান চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেখানে বহু পাকা ধানের জমি ডুবে গিয়েছে। আবার ধান কাটা অবস্থায় থাকা জমিও ডুবে গিয়েছে। কৃষি দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকায় অধিকাংশ ধান চাষি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জামালপুরের বিধায়ক অলোক কুমার মাঝির খন্ডঘোষের শঙ্করপুর এলাকায়ও বিঘের পর বিঘে জমিতে জল জমে ধানের ক্ষতি হয়েছে। তাই যতটুকু ধান বাঁচানো যায় সেই চেষ্টায় করেন বিধায়ক।

জানা গিয়েছে, বিধায়ক ৩ বিঘা জমিতে গোবিন্দভোগ ধানের চাষ করেছিলেন এবং ১০ কাঠা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তবে বৃষ্টির জেরে সমস্ত জমিতে জল জমে যায়। জমির অধিকাংশ পাকা ধানই মাটি দিয়ে শুয়ে পড়েছে পড়েছে। সেগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে। আবার যে ১০ কাঠা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন সেই জমিতে জল জমে বীজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিধায়ক জানান, ধানের জমি জলে ডুবে থাকতে দেখে তিনি তা বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। বিধায়ককে এভাবে মাঠে নামতে দেখে অবাক হয়েছেন সকলেই। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয়দের প্রশংসাও পেয়েছেন। স্থানীয়দের বক্তব্য, বিধায়ক ছোটবেলা থেকেই চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। তিনি একজন চাষি পরিবারের সন্তান। ফলে ফসলের ক্ষতি এভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাই নিজেই তিনি মাঠে নেমেছেন। বিধায়ক জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে চাষবাস করেছেন। তিনি বর্তমানে একজন বিধায়ক হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি যে চাষি পরিবারের সন্তান সেটা তিনি ভুলতে চান না।