আলুচাষে ক্ষতির কারণে আত্মঘাতী হননি পূর্ব বর্ধমানের কৃষক, দাবি কৃষিমন্ত্রী শোভনদেবের

গত শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার নিমদহ পঞ্চায়েতের ছাতনী উত্তরপাড়া এলাকায় এক আলু চাষি আত্মঘাতী হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় পরিবারের তরফে দাবি জানানো হয়েছিল, গত দুদিনের অকাল বৃষ্টিতে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার কারণেই লোকসানের আশঙ্কায় আত্মঘাতী হয়েছিলেন ওই চাষি রূপসনাতন ঘোষ। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে। এই নিয়ে কৃষকের মৃত্যুতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: অকাল বৃষ্টির জেরে নষ্ট হয়েছে ২ বিঘে আলুর বীজ, লোকসানের আশঙ্কায় আত্মঘাতী কৃষক

রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ওই চাষির মৃত্যু আলু চাষে ক্ষতি হওয়ার কারণে হয়নি। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই আত্মহত্যার বিষয়টি মানা যায় না। তাঁর বক্তব্য, কৃষকদের জন্য কৃষি ঋণের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা করা হয়। এর পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সার দেওয়ার ক্ষেত্রেও বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। তবে বিরোধীরা সেই দাবি মানতে চাইনি। তাদের বক্তব্য, আলু চাষে ক্ষতি হওয়ার কারণেই ওই কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। 

সোমবার বিজেপির কিষাণ মোর্চার প্রতিনিধি দল ওই কৃষকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কিষাণ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক প্রভাত ঝা। তিনি দাবি করেছেন, ওই কৃষক আলু চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। চাষের ক্ষতি হওয়ার কারণেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। এর পাশাপাশি সিপিএমের তরফে প্রতিনিধি দলও কৃষকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে। তবে তৃণমূলের দাবি, পারিবারিক কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই কৃষক। 

প্রসঙ্গত, পরিবারের দাবি, প্রতিবারের মতো এবারও জমিতে আলু চাষ করেছিলেন ওই চাষি। এবার তিনি দু বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তিনি দামি বীজ কিনেছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে। আলুর বীজ কেনার জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছিল তার। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা দুদিনের বৃষ্টির পর থেকেই দুশ্চিন্তার মধ্যেই ছিলেন ওই চাষি। শুক্রবার দুপুর থেকে তিনি খাওয়া দাওয়া করেননি। বন্ধুবান্ধবদের কাছেও আলুচাষ নিয়ে আশঙ্কা করেছিলেন, তার প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে। রাতেও তিনি খাবার খাননি। এরপর সকালে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি আম গাছে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরিবারের সদস্যদের দাবি, আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কায় মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।