‘‌এটা গভীরভাবে অভিনীত কোনও চিত্রনাট্য নয়ত’‌, সংসদ হামলা নিয়ে সন্দেহ কুণালের

ঠিক ২২ বছর আগে এমনই এক শীতের দিনে সংসদে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। বহু জওয়ানের প্রাণ গিয়েছিল। গোটা দেশে তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। আবার সেই স্মৃতি উস্কে মারাত্মক কাণ্ড ঘটল লোকসভায়। আজ, বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন হঠাৎই দর্শক আসন থেকে সংসদের চেম্বারে ঝাঁপ দেন দুই ব্যক্তি। ছড়িয়ে দেয় গ্যাস। তাতে অসুস্থবোধ করতে থাকেন সাংসদরা। ক্যান ছুড়ে মারতেই গলগল করে বেরতে থাকে হলুদ রঙের ধোঁয়া। এই গোটা ঘটনা একটা ‘চিত্রনাট্য’ হতে পারে বলে সন্দেহপ্রকাশ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, এই ঘটনা অভিনয়ও হতে পারে।

এদিকে এই ঘটনায় সংসদের ভিতরে শোরগোল পড়ে যায়। ওই দুই ব্যক্তিকে ধরতে এগিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তখনই তারা সংসদের ভিতরে সন্দেহজনক গ্যাস ছড়িয়ে দেয়। হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় সংসদের অধিবেশন চত্বর। লোকসভার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দুই যুবক সভাকক্ষের মাঝে লাফিয়ে পড়ে। ভয়ে সাংসদরা ছুটতে থাকেন। কারণ হামলাকারীরা হলুদ রঙের গ্যাস সভায় ছড়িয়ে দিচ্ছিল। ২২ বছর আগে ১৩ ডিসেম্বরই সংসদে জঙ্গি হামলা হয়েছিল। এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‌আজ যা হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যদি এটা সত্যি নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলার ঘটনা হয়, তাহলে তার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। এটা কীভাবে হতে পারে? গ্যালারি পর্যন্ত যাওয়া সহজ নয়। আমি গ্যালারিতে গিয়েছি। যেতে গেলে যত বেষ্টনী পার করতে হয়। সেটা কম নয়। সর্ষের মধ্যে ভূত না থাকলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না।’‌

অন্যদিকে গ্যাস ছড়ানো যুবকদের আটক করা হয়। সংসদ থেকে বাইরে বের করা হয় সমস্ত উপস্থিত সাংসদদের। মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই ঘটনার পর সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একইসঙ্গে এই ঘটনায় সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কোনও সংসদের ক্ষতি হয়নি বলেই খবর। তবে হলে তা পূরণ করা যেত না। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। একাধিক কেন্দ্রীয় এজেন্সি এই ঘটনার তদন্তে যোগ দিতে পারে বলে সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন:‌ শহরের রাজপথে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা, তীব্র গতির লরি পিষে দিল কনস্টেবলের মাথা

তবে কুণাল ঘোষ মনে করেন, এটা নিছকই সাজানো ঘটনা। এমনকী চিত্রনাট্যও হতে পারে। কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‌সামনে লোকসভা নির্বাচন আসছে। তার আগে এই ঘটনা দেখলে মনে হবে বহিরাগত শত্রু আসছে। কিন্তু এটা গভীরভাবে অভিনীত কোনও চিত্রনাট্য নয়ত। এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও মস্তিষ্ক আছে কি না সেটা দেখতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী ইস্যু থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা নয়ত। বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত বলেই এমন রাজনৈতিক ছক কষা হচ্ছে।’‌