চোখের ১২৯ ধরনের কৃত্রিম লেন্সের দাম বেধে দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ।
এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে লেন্সের মূল্য তালিকা জনগণের জন্য প্রদর্শন করতে হবে।
ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ এর ৩০(১) ধারা মোতাবেক ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কিছু প্রতিষ্ঠানকে চোখের লেন্স (ইনট্রা অকুলার লেন্স) বিক্রির রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। এ ধরনের লেন্স ব্যবহারকারী হাসপাতালকে কিছু নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ‘বিশেষভাবে অনুরোধ’ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র মো. নুরুল আলম বলেন, ‘চোখের লেন্সের বাজারে দীর্ঘদিন একটা নৈরাজ্য বিরাজ করছিল। সরকার ১২৯টি লেন্সের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। ফলে মানুষ এখন ন্যায্যমূল্যে লেন্স পাবে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ নির্ধারিত দামের বেশি নিলে তার দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান ঔষধ ও কসমেটিক আইন ২০২৩ এ রয়েছে। নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে লেন্স বিক্রি বন্ধে নজরদারির জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের একটি মনিটরিং কমিটি রয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চোখের লেন্স ব্যবহারকারী সব হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে ইনট্রা অকুলার লেন্সের মূল্য তালিকা নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শন করতে হবে। এ ধরনের লেন্সের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত না করার ব্যবস্থা নিতে হবে। লেন্সের নাম, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ও লেন্স উৎপাদনকারীর নাম উল্লেখ করে পৃথক ক্যাশ মেমো দিতে হবে।
যেসব লেন্সের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো হলো- থাইল্যান্ডের হয়া ল্যাম্পুন লিমিটেডের হয়া আইইএনএস-২৫১ মডেল ১৫ হাজার ৮৯০, হয়া আইইএনএস-১৫০ মডেল ৯ হাজার ৮৫, এক্সওয়াই১-এসপি মডেল ২১ হাজার ১৯০, পিসি-৬০ এরা মডেল ৮ হাজার ৩২৫, হয়া ভিভিনিক্স টরিক ৪৬ হাজার ২৩৮, হয়া নামিক্সমাল্টিসেরট ১৯ হাজার ২৮০ টাকা।
ভারতের ট্রফোল্ড–ফোডেবল এক হাজার ১৯০ টাকা, এক্সিলেন্স রিজিড পিএমএমএ ২০৩, অপটিমা লেন্স ২০১, অপটিমা অ্যাক্রিলিক ৮৭১, ম্যাক ফোল্ড ৮০০, অপটিমা ভিইউই তিন হাজার ৮০০, আইক্রেল টোরিক ১৬ হাজার ৪৪২, আইক্রেল প্লাস চার হাজার ৭৩৩, আইক্রেল প্লাস হাইড্রোলিলিক এক হাজার ৪২৪, আইক্রেল এসইআরটি ছয় হাজার ৩৬০, একোয়া ফোল্ড এক হাজার, এক্রিভাস দুই হাজার ৯৫০, ইউরোলেন্স ২২৮, ইউরোঢোল্প এক হাজার ১৩, ইউরোভিউ তিন হাজার ১৬৫, ইউরোভিউ টোরিক ১৬ হাজার ৬০০, ইউরোভিউ ডিফাইন ৩৯ হাজার ১০০ টাকা।
এ ছাড়া ইউরোভিউ ইভি গোল্ড সাত হাজার ২৯৩, ইউরোব্ল ২২০, ইউরোভাইস ৩০৫, ইউরোজেল প্লাস এক হাজার ৪২৩, ইউরোসিল চার হাজার ২৫০, আইরো অপকটেন লিকুইড পাঁচ হাজার ৯৩২, ন্যানো আইওএল পাঁচ হাজার ৯৩০, ন্যানো আইএএল ২০১, ন্যানো এসকিউডি–৩৬০ মডেল ৪০২, ন্যানো কিউ ৪৯১, ন্যানো ফোল্ড ৮৭১, আইলা অ্যাক্রেলিক তিন হাজার ২৬৬ টাকা, অ্যাক্রেলিক ৮৯০, ক্লারভিউ ৬৮০, হাইড্রোফিল (এফএ-৬০২৫) এক হাজার ১৪৫, কেটরাকোর ১৮১, গ্লোফোল্ড ৭২৬, অকুফ্লিস ৭৮০, আই-ও-কেয়ার ১৪৩, অ্যাক্রোল ইসি চার হাজার ৫৪৬, অ্যাক্রোল প্রিলোডেড দুই হাজার ৭২৮, অ্যক্রিডিফ ২১ হাজার ৪২৯, অ্যাপেলেন্স ২২৮, অ্যক্রিফোল্ড ইন্ট্রিকুলার এক হাজার ১৩, সুপার ফোব তিন হাজার ২৬৬ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের একিউট পিএমএমএ এক হাজার ৫৯৮ টাকা, একিউইটি হাইপ্রোফোবিক ছয় হাজার ৬৬০, আইকিউ অ্যাক্রেলিক ১৬ হাজার ৩২৫, অ্যাক্রোসফ মাল্টপিস ছয় হাজার ৯০০, অ্যাক্রোসফ অ্যাক্রলিক ৯ হাজার ৭০২, অ্যাক্রোসফ আইকিউ টরিক ৪১ হাজার ৫০৫, অ্যাক্রোসফ আইকিউ এসফেরিক ১৮ হাজার ৫৮৪, অ্যাক্রোসফ আইকিউপেনপটিক ৮০ হাজার ২২৩, অ্যাক্রোসফ আইকিউ ভিভিটি ৮৬ হাজার ১২৫, ক্লেরন হাইড্রোফবিক ১৮ হাজার ৮৫০, সানকস্ট হাইড্রোফিলিক চার হাজার ৫৫০, সানকস্ট পিএমএমএ এক হাজার ৬২০, মাইরাডো ১১ হাজার ৫০০, ভিসটাজো পাঁচ হাজার ৪০০, ওএসআই পিএমএমএ এক হাজার ৫০০, সানকস্ট হাইড্রোফিবিক ১৩ হাজার, ইভিও ভিসিন আইসিএল ৫৫ হাজার ২০৩, ইভিও ভিসিন টোরিক আইসিএল ৮২ হাজার ৪২৭, ইভিও প্লাস ৫৫ হাজার ২০৩, ইভিও প্লাস ভিসিন টোরিক ৮২ হাজার ৪২৭, একেআরইওএস (মাইক্রো) ১৩ হাজার ৭২৪, একেআরইওএস (অ্যাডভান্স) আট হাজার ২০০, ইএন ভিসটা ১৫ হাজার ৫০০, আইএসআইওএল পিএমএমএ এক হাজার ৫৮৫, এমডিআর পিএমএমএ এক হাজার ৬০০, এমডিআর হাইড্রোলিলিক চার হাজার ৫০০, এমডিআর হাইড্রোফিলিক অ্যাক্রেলিক ছয় হাজার ৯০০, আইএসআইএএল ফোল্ডাবেল চার হাজার ৮০, টেক-লেন্স ২৬ হাজার ৬০০, টেক লেন্স (৮৭২) ৫৯ হাজার, টেক লেন্স (৮৭২ ওয়াই) ছয় হাজার ৪০০, টেক লেন্স (৯০০) সাত হাজার ৯৫০, প্রিসিসেল সফট (পি ৩০২ এ) ১৫ হাজার ১৫০, প্রিসিসেল সফট (পি ৩০২ এসি) ৯ হাজার ৮৫০, হাইড্রোফিলিকসিএলএম ফ্লিক্স-৪২ পাঁচ হাজার ১০০, অ্যস্ট্রেরি ৫৬ ইনজেক্টর সাত হাজার, আইসোটেকনিক পিএমএমএ দুই হাজার ৩০০, আইসোটিনক হাইড্রোফিলিক পাঁচ হাজার ৭০০, আইসোটিনক হাইড্রোফিলিক ইয়েলো ১৫ হাজার, আইসোটিনক হাইড্রোফিলিক (আইবি ৬০) ১০ হাজার ৪০০, আইসোটিনক হাইড্রোফিলিক (২৫ বিএসওয়াই) ১৩ হাজার ৫০০, আইসোটিনক হাইড্রোফিলিক (এইচপি-২৫) ১১ হাজার ২০০, সেনসার এইচডিওয়াই সাত হাজার ৩২৫, সেনসার-১ পিস ৯ হাজার ৫৯৭, টেকনিস মনোফোকাল ১৬ হাজার ৫৬২, টেকনিস সিমফনে ৮৯ হাজার ৫৪৭, টেকনিস আইহেন্স ২২ হাজার ৯২২, ডিজিআর হাইডোফোবিক ছয় হাজার ৯০৩ ও চার হাজার ৮৮ এবং ডিজিআর পিএমএমএ এক হাজার ৬২০ টাকা।
জাপানের নেক্স লয়েড এসপি ১৪ হাজার, নেক্স লয়েড এসপি ক্লিয়ার ১১ হাজার ৭০০। বেলজিয়ামের ভিসকোট স্টেরিল ৪৬৫০, আইএসওপিউর ২৫ হাজার ৫০০, ফাইন ভিশন ৭২ হাজার ৫০০, মাইক্রোপুরি-১২৩ ১৫ হাজার টাকা।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ফ্যাকো সার্জারির পর ব্যবহৃত লেন্সের প্যাকেট রোগীকে সরবরাহ করতে হবে। চোখের লেন্সের প্যাকেটের গায়ে উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, উৎপাদক দেশ ও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য উল্লেখ করতে হবে। চক্ষু সার্জনদের ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা থাকতে হবে।
নিবন্ধন পাওয়া ২৯টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নাম, তাদের পণ্যের নাম ও মূল্যের তথ্য যুক্ত করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।