‘‌দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়ে মহিলাদের মিলল‌ শাড়ি, মাংস–ভাতে দেদার খানাপিনা

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার সরকারে এসে নিজের সরকারকে একেবারে রাস্তায় নামিয়ে এনেছেন। মানুষের দরজার গোড়ায় পরিষেবা পৌঁছে দিতেই শুরু হয়েছিল ‘‌দুয়ারে সরকার’‌ শিবির। রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্প মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য। এবারের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির আরও একধাপ এগিয়ে গেল। যা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। এবার মহিলারা এই শিবিরে এসে সরাসরি শাড়ি পেলেন বলে খবর। শুধু শাড়ি বিলি করাতেই শেষ হয়নি এই শিবির। এমনকী পাত পেড়ে মাংস–ভাতও খাওয়ানো হয়েছে শিবিরে আসা লোকজনকে। তবে এই ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়–২ ব্লকের বেঁওতা–২ পঞ্চায়েতের কাঁঠালবেড়িয়া প্রাথমিক স্কুলের মাঠে। তারপরই শুরু হয়ে যায় বিরোধীদের কটাক্ষ।

এই ঘটনা চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। প্রথম ব্যাচে যাঁরা শাড়ি পেয়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরে ফিরেছেন তাঁরাই বাকি গ্রামবাসীদের এই খবর চাউর করেছেন। আর তাতেই উপচে পড়েছে ভিড়। মুহূর্তের মধ্যে প্রায় দু’‌হাজার মানুষ হাজির হন দুয়ারে সরকার শিবিরে। তারপর সোজা পৌঁছে যান খেতে। যেখানে মেলে— ভাত, ডাল, পটল চিংড়ি, আলুভাজা, মাছ, মাংস, চাটনি এবং পাঁপড়। এই ভিড় দেখে বিরোধীরা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন। তবে এদিন ৪০০ মহিলাকে নতুন শাড়ি দেওয়া হয়। এই বিষয়ে বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌দুয়ারে সরকার শিবিরে সরকারিভাবে কোনও খাওয়ার আয়োজন হয় না। প্রধান ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে করেছেন।’‌

এদিকে দুয়ারে সরকার শিবির রাতারাতি শীতের পিকনিক স্পট হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীরা একসঙ্গে খেতে বসে রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করতে থাকেন। একে তো শাড়ি মিলল, সঙ্গে আবার এমন চব্য–চষ্য খাওয়া চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। সামাজিক প্রকল্প তো মিলবেই তার আগেই যা মিলল সত্যিই বাহবার যোগ্য। এসব আলোচনা হতে থাকে। আর এই গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান সাবির শেখ বলেন, ‘‌সকাল থেকে গ্রামের মানুষজন পরিষেবা পেতে শিবিরে এসেছিলেন। তাই তাঁদের কথা ভেবে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অনেকের বাড়িতেই উনুন জ্বালাতে হয়নি। সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে এলাকার ৪০০ শিক্ষিত মহিলাকে কাজে লাগানো হয়েছিল। উপহার হিসেবে তাঁদের মিলেছে শাড়ি।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌টেট পরীক্ষা নিয়ে কোনও অসুবিধা হবে না’‌, বিজেপির মামলাকে অগ্রাহ্য করে বার্তা ব্রাত্যর 

অন্যদিকে বিরোধীরা এসব মেনে নিতে চাইছেন না। তাঁদের মতামত অন্যরকম। তাই এই ঘটনার কথা শুনে কটাক্ষের বাণ ছুড়েছেন তাঁরা। এই শিবিরে লোক টানতে এসব করা হয়েছে এবং মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে এমন সব আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। এই বিষয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর কটাক্ষ, ‘‌দুয়ারে সরকার শিবিরে মানুষ আবেদন করে যাচ্ছেন। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। তাই আর শিবিরে কেউ আসতে চাইছেন না। তাই লোক টানতে এসব করছে।’‌ আর সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ একই সুরে বলেন, ‘‌দুয়ারে সরকার করে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। মানুষের মন পেতেই এমন ব্যবস্থা।’‌