বিচ্ছিন্ন ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না: ইসি আলমগীর

ভোটের মাঠের পরিবেশ ভালো রয়েছে দাবি করে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ভোটারদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, ‘কোনও দল ভোটে না এসে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের নিষেধ করলেও কোনও ধরনের নাশকতা, উসকানি দিলেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪টি জেলা ঘুরে এসে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সার্বিক পরিবেশ তুলে ধরে মো. আলমগীর বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। কোথাও কোনও ধরনের সমস্যা নেই। স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা সব জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখেছেন। সুন্দর সুষ্ঠু, পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যেন সম্ভব হয়, সে বিষয়টি তারা আশ্বস্ত করেছে। তাদের পদক্ষেপের পাশাপাশি ইসির পক্ষ থেকে যেসব পরামর্শ দেওয়া দরকার, তা দিয়েছি।’

প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর উৎসবের আমেজে প্রচারণা ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখেছেন বলে জানান তিনি।

যাওয়া-আসার পথের ও নির্বাচান এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোটারদের মধ্যে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনায়ই দেখেছি। যারা প্রার্থী রয়েছেন, প্রতীক পেয়ে বেশ মিছিল, সভা করছেন। বেশ আনন্দেই আছেন। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। পুলিশ ও প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, কোথাও কোন এমন থ্রেট নেই যে, নির্বাচনে সমস্যা হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস বুঝতে হবে— এটা গণতান্ত্রিক দেশ। স্বাধীনভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার যেমন অধিকার রয়েছে, অংশ না নেওয়ারও অধিকার রয়েছে। কোনও দল যদি অংশ না নেয়, সেটা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছে, কৌশল। এতে সমস্যা নেই। একইসঙ্গে তারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধও করতে পারে, তাতেও সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা শান্তিপূর্ণভাবে বলতে হবে। কোনও নাশকতা, উসকানি, বিশৃঙ্খলা করা যাবে না— এটা করলে নির্বাচনি আইন বিধি অনুযায়ী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ যাতে না করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। আমরা কঠোরভাবে দেখবো।’

বিএনপি ও সমমনাদের ভোট প্রত্যাখ্যান ও নাশকতার প্রচেষ্টা, ভোটারদের মাঝে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনায় কোনও প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সহিংসতা একেবারেই দুয়েকটা ক্ষেত্রে বলা যায়। শান্তিশৃঙ্খলার সঙ্গে এটার মাত্রা তুলনা করলে একেবারেই নগণ্য। যেটা করছে, খুবই বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন  অত্যন্ত তৎপর। কোনও নাশকতা ঘটার চেষ্টা করছে কিনা, সংগঠিত করার চেষ্টা করছে কিনা, তারা অত্যন্ত সজাগ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোথায় এ ধরনের নাশকতামূলক কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। ৩০০ আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া  পড়েছে, যেখানে আনন্দ উৎসবের অবস্থা হয়েছে, সেখানে এগুলো কোনও প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচন যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে হবে।’

নির্ধারিত সময়ের পর (মনোনয়ন জমার শেষ সময় ৩০ নভেম্বর)বিএনপি ও অন্য দলগুলো ভোটে না আসায়— আর নতুন করে তাদের জন্য কোনও সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়ের মধ্যে এলে আমরা তখন বলেছিলাম— কিছু করতে পারবো, রিশিডিউল করতে পারবো। এ সময় পার হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে আর কিছু করার সুযোগ নেই।’

উল্লেখ্য, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং অন্য চার নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো, আলমগীর ও আনিছুর রহমান বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।