দুই উপজেলার আ.লীগ নেতারা সঙ্গে এলেও বড় চ্যালেঞ্জে শাহজাহান ওমর

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যরিস্টার এম শাহজাহান ওমরের (বীর উত্তম) নৌকায় উঠলেন রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু তার বরিশালের বাসায় দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের ডেকে নৌকা জেতাতে কাজ কঠোর নির্দেশনা দেন।

তবুও বিএনপি ছেড়ে আসা শাহজাহান ওমরের জন্য এই আসনে জিততে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা উপ-কমিটির সদস্য ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির। দলের কঠোর অবস্থার মধ্যে শেষ পর্যন্ত মনির যদি মাঠে টিকে থাকতে পারে তবে শাহজাহান ওমরের গলার কাঁটা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলীয় সমর্থকরা।

এদিকে, আসনটি বরাবরই বিএনপি ও শাহজাহান ওমরের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। তিনি এ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভূমি ও আইন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় ওমরের প্রতি একটি সহানুভূতি কাজ ছিল ভোটারদের। তবে এবারের সমীকরণ ভিন্ন। হঠাৎ দল পাল্টালেও তার সমর্থকদের একাংশ তার সঙ্গে নৌকার নির্বাচনে কাজ করছেন। তবে একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা রয়েছে। তারা সাবেক এই বিএনপি নেতাকে ‘বেইমান’ আখ্যা দিয়ে রাজাপুরে প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেন।

বিএনপি ঘরানার একটি অংশ ভোটকেন্দ্রে গেলে শাহজাহান ওমরের বিকল্প প্রার্থীকেই বেছে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ওমরপন্থি আরেকটি অংশ তার হয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। 

শাহজাহান ওমরের আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রথমদিকে নেতাকর্মীরা শাহজাহান ওমরের হয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় না নামলেও উভয় পক্ষের মধ্যে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সমঝোতা হলে প্রথম সাড়ির নেতারা বুধবার থেকে নৌকার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তবে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনিরের নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও ভোটাররা মনে করেন, শাহজাহান ওমর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একাংশের যেমনিভাবে সমর্থন ও ভোট পাবেন, ঠিক একইভাবে মনিরুজ্জামান মনিরও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাংশের সমর্থন ও ভোট পাবেন। ভোটের সমীকরণে উভয় দলীয় নেতাকর্মীদের ভোটের হিসাব বাদ দিলে সাধারণ মানুষের ভোট যার দিকে যাবে সে প্রার্থীরই বিজয়ের পথ সুগম হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনিরুজ্জামান বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে শাহজাহান ওমরের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতারা আমার পাশেই থাকবে বলে মনে করি।

আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী সঙ্গে রয়েছে কি না জানতে চাইলে ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বলেন, আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলকে অলংকৃত করেছি। আশাকরি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী আমার পাশে থাকবেন।