পায়রা খুঁজতে গিয়ে চোর বদনাম নবম শ্রেণির ছাত্রকে, পিটিয়ে খুনের অভিযোগ কেতুগ্রামে

পায়রা চুরির অভিযোগ উঠল নবম শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। আর তাই তাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কেতুগ্রাম থানার অন্তর্গত পাণ্ডু গ্রামে। ছোট থেকেই পায়রা পোষার শখ ছিল এই নবম শ্রেণির ছাত্রের। বাড়িতে পায়রা ছিল। তবে তার মধ্যে একটি পোষা পায়রা শুক্রবার উড়ে যায় পাশের পাড়ায়। আর সেই পায়রা ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। কিন্তু তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেনি ছাত্রটি। আজ, শনিবার উদ্ধার হয় ছাত্রের দেহ। মুখে, পায়ে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে ওই ছাত্রের পায়রা উড়ে যেতে দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে খোঁজাখুঁজি করে পায়রা ফিরিয়ে আনার সময়ই ঘটে বিপত্তি। পায়রা চোর সন্দেহে তাদের আটকে রাখে ওই গ্রামের বাসিন্দারা। আর প্রচণ্ড মারধর করা হয়। পরেরদিন সকালে মাঠ থেকে উদ্ধার হয় নবম শ্রেণির ওই কিশোরের মৃতদেহ। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নবম শ্রেণির ছাত্রের দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। কেমন করে কিশোরের মৃত্যু হল?‌ উঠছে প্রশ্ন। তবে এই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও পরিবার ও আত্মীয়দের দাবি, পিটিয়ে খুন করা হয়েছে ছেলেটিকে।

অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম বিশ্বজিৎ দাস (১৬)। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ মাসুন্দি গ্রামের মাঠ থেকে ওই কিশোরে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ওই পড়ুয়ার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পায়রা চোর সন্দেহে তাকে আটকে রাখা হলে বিশ্বজিতের দুই বন্ধু ভয়ে পালিয়ে যায়। শনিবার গ্রামের মাঠে ওই কিশোরের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। তার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়েছে। তাকে কেতুগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন:‌ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে অপসারণ করলেন রাজ্যপাল

এছাড়া মৃত ওই ছাত্রের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের পাণ্ডু গ্রামে। পরিবার সূত্রে খবর, পায়রা খোঁজার সময় চোর সন্দেহে গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে তিন বন্ধুকে। এক বন্ধু পালিয়ে বাঁচতে পেরেছিল। অপর এক বন্ধুকেও আটকে রেখে চড়–থাপ্পড় মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য ছাড়া হয়েছিল দ্বিতীয় বন্ধুও। কিন্তু যে কিশোরের পায়রা হারিয়ে গিয়েছিল, সেই কিশোর শুক্রবার সারারাত বাড়ি ফেরেনি। মৃত ছাত্রের বাবা বিকাশ দাস বলেন, ‘‌শুভ সেখান থেকে পালিয়ে আসে। শুভ গ্রামে এসে খবর দেয় ওদের দু’‌জনকে আটকে মারধর করা হচ্ছে। বাবুসোনার বাড়ি থেকে লোকজন এবং আরও কয়েকজন মাসুন্দি গ্রামে যায়। সেখানে গিয়ে বাবুসোনাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু আমার ছেলেকে দেখতে পায়নি। আর বাড়িও ফেরেনি।’‌ এই বিষয়ে এসডিপিও কাটোয়া কৌশিক বসাক বলেন, ‘শনিবার ময়নাতদন্ত সম্ভব হয়নি। রবিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত হবে। তখন জানা যাবে, কেমন করে মৃত্যু হয়েছে।’‌