নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, প্রত্যাশা প্রার্থীদের

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কেউ বানচাল করতে পারবে না। নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। যারা নির্বাচনে আসেনি দেশের জনগণ তাদের ভুলে গিয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা গণসংযোগে এসব কথা বলেন।

ঢাকা ১৩ আসনের নৌকার মনোনীত প্রার্থী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক মোহাম্মদপুর ৩২ নং ওয়ার্ড লালমাটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় নানক বলেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনটি অত্যন্ত সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। বিএনপি জামায়াত নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে কিন্তু কোন লাভ হবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ কেন্দ্রীয় গিয়ে ভোটদানের মধ্যদিয়ে অপশক্তিকে রুখে দিবে। নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক। সকল প্রার্থী প্রতিদিন দিতে করেই নির্বাচনে জয়ী হতে হয়। তাই নির্বাচনের প্রতিযোগিতায় প্রার্থীদের সহিংসতায় না জড়ানোর অনুরোধ জানান নানক।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা ৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করেন। এছাড়া তিনি সেগুন বাগিচা পি ডব্লিউ ডি স্টাফ কোয়াটার, চিটাগাং হোটেল এলাকা, অভিযান ক্লাব, সেগুন বাগিচা হাই স্কুল এলাকা, ঢাকা রির্পোটাস ইউনিট এলাকা, প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে কদম ফোয়ারা এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, ফজলুল হক হল, শহীদুল্লাহ হল, আনন্দ বাজার, ফুল বাড়িয়া পশ্চিম এলাকা, বঙ্গ বাজার, গুলিস্থান গোলাপ শাহ মাজার হয়ে পীর ইয়ামেনি শাহ-শাহাব বাড়ি এলাকায় গণসংযোগ করেন।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা সন্ত্রাস মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই, আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। আর এ জন্য যারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত সকলকেই যার যার অবস্থান থেকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। নির্বাচন প্রতিযোগিতা মূলক হোক সেটা আমরা চাই। যারা নির্বাচনে আসেনি দেশের জনগণ তাদের ভুলে গিয়েছে। যারা ট্রেন মিস করে সেই যাত্রীদের খোঁজ কেউ রাখে না। এখন ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেও কোন লাভ নেই। ট্রেন চলছে এবং সেটি তার গন্তব্যে পৌঁছাবে।

তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি এবং তাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তাদের মধ্যে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখেছি তা আমাদের আনন্দিত করেছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে আমরা অভিভূত। মানুষের চোখে মুখে আমরা ব্যাপক আনন্দ ও উৎসাহ দেখতে পেয়েছি।

ঢাকা-১৬ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ ইলিয়াছ উদ্দিন মোল্লার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও প্রার্থী আলহাজ ইলিয়াছ উদ্দিন মোল্লা।

তিনি বলেন, আজকে লন্ডনে বসে হুকুম দেওয়া হয় আর এখান থেকে তাদের দলের সন্ত্রাসীরা আগুন দেয়। সম্প্রতি ট্রেনে আগুন দিয়ে কি নির্মমভাবে মা-শিশুকে হত্যা করা হয়েছে! এখন সেই তারেক জিয়া অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। বর্তমান সরকারকে এখন থেকে আর কোনো সহযোগিতা না করতে প্রশাসন ও দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহ্বানও জানিয়েছেন। ভাবটা যেন তারেক জিয়ার ডাকে সারা বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ! সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যার উন্নয়নের বাংলাদেশ ফেলে খুনি তারেক জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেছে। এমন একটা ভাব! আসলেতো এরা ভুয়ামি এবং ভণ্ডামির উপর টিকে আছে। বিএনপির এই অসহযোগ আন্দোলনের ডাক জনগণের সাথে আরেকটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।

ঢাকা-৬ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন দুপুরে পুরান ঢাকার ওয়ারীতে গণসংযোগ করে বলেন, আইন ও সংবিধান সম্মতভাবে জনমত সৃষ্টি করার মাধ্যমে যে কেউ ভোট বা নির্বাচন বর্জনের চেষ্টা করতে পারে। সেখানে আমাদের কোনো বিষয় থাকে না। তবে রাজনীতিটা কোনও অনলাইন গেম নয়। কেউ লন্ডনে বসে সুইচ টিপ দিলো, ঢাকা শহরের মানুষ নাচতে শুরু করলো বিষয়টা মোটেও এরকম না। লন্ডনে বসে বাটন টিপে রাজনীতি হয় না।

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

ঢাকা-১৮ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের খিলক্ষেত থানার তলনা, মস্তুল, পাতিরা, ডুমনী, খিলক্ষেত উত্তরপাড়া, আমতলা, বটতলা এবং খিলক্ষেত বাজারে গণসংযোগ করেন। এসময় বিভিন্ন সভায় শেরীফা কাদের বলেন, নির্বাচনের মাঠে অনেকে গুন্ডামি করতে চায়। আমরা ভদ্রতা পছন্দ করি। আমাদের ভদ্রতাকে কেউ যেন দুর্বলতা না ভাবে। আমরা কখনোই দুর্বল নই। আমরা মানুষের সাথে আছি, সাধারণ মানুষ আমাদের সাথে আছেন।

জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা -১৮ আসনে নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি হাসপাতাল ও রাস্তা ঘাট নির্মাণ করা হবে। জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় বালু নদীর তীরে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করবো। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করা হবে। আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পূরহিতদের সম্মানী রাষ্ট্রীয় ভাবে দেয়া হবে।