Climate Change and Health Issues: ডিসেম্বরে নেই শীত, লাগছে না গরমজামা! শরীর সুস্থ থাকবে কীভাবে? HT বাংলাকে বললেন চিকিৎসক

শীত এসেও যেন আসেনি। কলকাতা শহর যেন মুড়তেই চাইছে না হিমের চাদরে। পেরিয়ে গেলো বড়দিনও। কিন্তু সোয়েটার ছাড়াই দিব্বি ঘুরে বেড়ানো যাচ্ছে শহরের রাস্তায়। শুধু তাই নয় বাসে, ট্রামে, ভিড়ভাট্টায় গেলে গরমের মতোই ঘাম ঝরছে শরীর বেয়ে। এ যেন এক অচেনা ডিসেম্বর নেমেছে শহর জুড়ে। আলমারিতে তোলা উলের পোশাক বের করার প্রয়োজন পড়ছে না। কাজে লাগছে না মোটা হুডিও।

 

প্রতীকী ছবি

(Freepik)

রাতেও খুব একটা কমছে না তাপমাত্রা। রাতে লেপ দেওয়ার কথা যেন ভুলেই গিয়েছে শহরবাসিরা। কম্বলটাও যেন মুখ ফিরিয়ে রয়েছে বাড়ির এক কোণে। কিন্তু এভাবে শীতকালেও ঠান্ডা না পড়ার প্রভাব কতোটা পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্যের উপরে? এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু মতামত জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিক।

 

শীতে ঠান্ডা না পড়াটা শরীরের জন্য কতোটা ক্ষতিকারক হতে পারে?

আমরা যে অঞ্চলে বাস করি সেখানে পৌষ, মাঘ শীতকাল স্নান করতে ভয় চা ছেলে বেলা থেকে জেনে আসছি। এই গোলার্ধে এই সময়ে ঠান্ডা পড়ার কথা বা তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কথা। প্রতিটি অঞ্চলের জলবায়ু বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে যেমন- ভৌগলিক অবস্থান, বাতাসের গতিবেগ, এবং বাতাসে জলকণার উপস্থিতি বা হিউমিডিটি। এই তিনটির উপর নির্ভর করেই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা নির্ধারিত হয়। যদি কোনও কারণে এর কোনও একটি বাধাপ্রাপ্ত হয় তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। বিভিন্ন কারণে বাতাসের ধুলিকণার পরিমাণ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স- এ বেশি মাত্রায় বাতাসে ধূলিকণা, কার্বণ মনোক্সাইড, সালফারডাই অক্সাইড সহ নানা রকম ক্ষতিকারক গ্যাস বাতাসে পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে বাতাস ভারি হয়ে উপরে যেতে পারছে না। এবং মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসের সাহায্যে এই বাতাস গ্রহণ করেছে ফলত মানুষের শ্বাসনালীর নানা অংশে বিভিন্নরকম ইনফ্ল্যামেশনের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে কয়েকশো গুণ।

তাই সোয়েটার পরতে অনিহা প্রকাশে শারীরিক সমস্যা না দেখা দিলেও পরিবেশ দূষণের কারণে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দূষণের কারণে আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা চারগুণ বেড়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও সর্দি, কাশি, জ্বর সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।

শুধু তাই নয় বিজ্ঞানী, গবেষকরা জানতে পেরেছেন যে এই ভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে মানুষের মারাত্মক ভাবে মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে রাগ বেড়ে যাচ্ছে, হতাশা বাড়ছে। এই ভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে মানুষ শারীরিক ও মানসিক দুই ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

এই হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন কি মানুষের স্বাস্থ্যের উপরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে?

‘বিন্দু বিন্দু জল জমে সিন্ধু তৈরি হয়’ এই ছোট ছোট শারীরিক সমস্যাগুলিই যাদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এর একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে পারে। কার ক্ষেত্রে কতোটা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কতোটা প্রভাব পড়তে পারে তা নির্ভর করবে তার পরিবারের সদস্য বা বন্ধুবান্ধবের উপর।

আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে হওয়া শারীরির সমস্যা থেকে বাঁচতে কী কী নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন?

শিশু বা বড়দের প্রত্যেককেই প্রাথমিক কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যার মধ্যে প্রথম হচ্ছে প্রটুর পরিমাণে পানীয় পান করতে হবে। সহজপাচ্য ও সাধারণ খাবার খেতে হবে। এ ছাড়াও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। কিন্তু যাতে ঠান্ডা না লাগে সে দিকেও নজর দিতে হবে। শিশুদের নাক ও কান ঢাকা আছে কি না তা লক্ষ্য রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাবার যেন সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর হয় সেদিকে অবশ্যই নিজের দিতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে ভ্যাকসিন নিতে হবে। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ করে যারা রেসপিরেটরি ট্র্যাক ইনফেকশনে ভোগেন তাদের নিউমোনিয়া জাতীয় সহজ ভ্যাকসিনগুলি নিয়ে রাখলে সুরক্ষা বাড়বে।