সাধুদের ভিড়ে গমগম করছে বাবুঘাট চত্বর, সাগরে পুণ্যস্নানের লগ্ন নতুন বছরেই

গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যস্নান শুরু হতে চলেছে রাত থেকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪ মাঝরাত (১২টা ২৩ মিনিট) থেকে ১৫ তারিখ মাঝরাত (১২টা ২৩ মিনিট) পর্যন্ত পুণ্যলগ্ন রয়েছে। সাগরে স্নান অন্যতম উৎসব সাধুসন্ত থেকে আমজনতার কাছে। আর তাই সাগর মেলা জমে ওঠে ভিন রাজ্য থেকে আসা সাধুসন্তদের ভিড়ে। প্রত্যেক বছর গঙ্গাসাগর মেলার কয়েকদিন আগে থেকে তাঁরা এসে পৌঁছন কলকাতায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে বাবুঘাটে ইতিমধ্যেই সাধুসন্তরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। তবে ২০২৩ সালের গঙ্গাসাগর মেলায় রাত বাড়তেই জোয়ারের জল বেড়ে যায়। তখন কাউকে স্নান করতে দেওয়া হয়নি। এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

এদিকে একহাজারের মতো সাধুসন্ত এখন বাবুঘাটে এসে পৌঁছেছেন। তাঁদের উপস্থিতি রীতিমতো গমগম পরিবেশ তৈরি করেছে। যদিও হাতে এখনও সময় আছে। তবে এখানে এসে মাটিতে বসে সাধনা করতে শুরু করেছেন তাঁরা। আর তাতেই অন্য আবহ তৈরি হয়েছে। প্রত্যেক বছর পৌষ মাস ছাড়া বাবঘাটের এই এলাকা ফাঁকাই থাকে। তবে সন্ধ্যা নামতেই সাধুদের আখড়াগুলিতে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষের ভিড় জমতে দেখা গেল। কত প্রশ্ন করছেন তাঁরা। কত কিছু জানার আছে মানুষের তাঁদের কাছ থেকে। এখন সেই পর্ব চলছে। এবার গঙ্গাসাগরে পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য নিষ্কাশনের বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মেলার সময় চালু থাকবে কঠিন বর্জ্যের জন্য সাতটি এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিনটি ইউনিট। পুণ্যার্থীদের মধ্যে ৬০ লক্ষ জলের পাউচ বিতরণও করবে প্রশাসন।

অন্যদিকে গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাবুঘাটে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন তাঁবু,প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। অস্থায়ী শৌচালয় থেকে শুরু করে থাকার জন্য পুণ্যার্থীদের জায়গা গড়ে তোলা হচ্ছে। সবকিছু তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। বাইরে থেকে আসা সাধুসন্তরা বলছেন, আর কদিন পরেই সরকারিভাবে তাঁরা বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এইসব সুবিধা প্রত্যেক বছরই দিয়ে থাকে। তাই সেই বিশ্বাসেই এসব তাঁরা বলছেন। ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগরের মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। পলি তুলে পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌সময় বেরিয়ে যাচ্ছে’‌, জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসকে বার্তা দিল তৃণমূল

এছাড়া চিকিৎসা থেকে শুরু করে মেলার প্রত্যেকটি পরিষেবা তুলে দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। দূরদূরান্ত থেকে সাধুদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। ট্রেনে করে হাওড়া এবং শিয়ালদায় এসে পৌঁছচ্ছেন সাধুসন্তরা। কয়েকদিন পরেই বাবুঘাটে পুণ্যার্থীদের ভিড়ে জমে উঠবে। বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলার ‘ট্রানজিট গ্রাউন্ড’–এর আয়োজন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কলকাতা পুরসভায়। সেখানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। ছিলেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার ও পূর্তসচিব অন্তরা আচার্য। লালবাজার ও পরিবহণ দফতরের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, এই বছর মেলা প্রাঙ্গণে আবার বসবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা কেন্দ্র। সকলের র‌্যাপিড টেস্ট হবে। দরকার পড়লে আরটিপিসিআর টেস্টও করা হবে।