ভোটারদের কেন্দ্রে আনার কাজটা করবে আ.লীগের টিম: ওবায়দুল কাদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ও ভোটের দিন হরতাল ডেকেছে বিএনপি। এ কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে আওয়ামী লীগ বিশেষ কোনও ব্যবস্থা রেখেছে কিনা জানতে চাইলে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভোটারদের কেন্দ্রে আনার জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা রাখিনি। গণতন্ত্রে সবসময় দেখা যায় কোনও নির্বাচন হলে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ভোটারদের কেন্দ্রে আনা—এটা আমাদের নেতাকর্মীদের টিম আছে, এই টিম সে কাজটা করবে। বেশিরভাগ ভোটারই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে। কেউ ভোট দিতে আসতে একটু দেরি করতে পারেন, তাদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের টিম কাজ করবে।’

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এখানে আওয়ামী লীগের মিডিয়া সেলের অফিস করা হয়েছে।

নির্বাচনের দিন দেওয়া বিএনপির হরতালের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির হরতাল-অবরোধ আমরা দেখেছি। হরতালে দিন আরও বেশি যানজট হয়। হরতাল-অবরোধ শুধু তাদের কর্মসূচিতে আছে, বাস্তবে নেই।’

বিএনপির আন্দোলনকে ‘মরিচা ধরা হাতিয়ার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মরিচা ধরা হাতিয়ার বিএনপি আগেও প্রয়োগ করেছে, কোনও লাভ হয়নি। সামনে লাভ হবে এমন আশা করাটাও দুরূহ।’

গ্রাম ও শহরে ভোটার টার্নআউট কেমন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গ্রাম ও শহরকে আমি পার্থক্য করতে চাই না। আমি একটা কথাই বলবো টার্নআউট সন্তোষজনক হবে।’

আওয়ামী লীগ কয়টি আসন পাবে ও বিরোধী দল কে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হলে এ বিষয়টা পরিষ্কার হবে। এই মুহূর্তে এ নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। আশা করছি ইনশাআল্লাহ আমরা এই নির্বাচনে বিজয়ী হবো। কত আসন সেটা আমি এখন বলতে চাই না। জনগণের ভালো স্বতঃস্ফূর্ততা আছে, আমরা ভালো আসনই পাবো। তবে কত আসন সেটা নিয়ে মির্জা ফখরুলের মতো গণক হতে চাই না। ইলেকশনের রেজাল্টই বিরোধী দল কে হবে সেটা বলে দিবে।’

এই নির্বাচন বিদেশিদের গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগে ইলেকশনটা হতে দিন। গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা এটা তো বিদেশিরাই বলবেন। আমরা বলছি, টার্নআউট ও অংশগ্রহণ সন্তোষজনক হবে। এটা একটা ভালো ইলেকশন হবে, যদিও প্রধান বিরোধীদল নির্বাচনে নেই। বিএনপি থাকলে ইলেকশনটা মোর কম্পিটিটিভ হতো। বিএনপি নেই তারপরও নির্বাচনটা প্রতিযোগিতামূলক হবে।’

হরতাল দেওয়ার কারণে ভিসানীতি আসবে কিনা বিএনপির ওপর, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন কোন ক্ষেত্রে ভিসানীতি প্রয়োগ হবে বা নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেটা আমেরিকা ভিসানীতিতে স্পষ্টভাবে বলেছে। বিএনপি নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত করছে, সে ক্ষেত্রে কেন তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসবে না বা ভিসানীতি আসবে না, এটা আমরা খোদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চাই, এটা আমাদের জিজ্ঞাসা।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় একশ’ স্থানে সহিংসতা হয়েছে ও তিন জন মারা গেছে। সেক্ষেত্রে এটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতটা সহায়ক—এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি এমন কোনও নির্বাচন আপনি দেখেছেন? আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়ায় বিধানসভা নির্বাচনে অনেক সহিংসতা হয়। এখানে প্রধান বিরোধীদল শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না, এমন না, তারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।’

অনেক বিদেশি সংবাদমাধ্যম এই নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন বলছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে যেটা হচ্ছে সেটা ওয়ান সাইডের ইলেকশন না। সেটা হবে ওয়ান সাইডেড বিরোধিতা।’

বিএনপির অভিযোগ সরকার ডামি প্রার্থী দিয়ে ডামি নির্বাচন করছে, এমন প্রশ্নের জবাব কাদের বলেন, ‘বিএনপি নিজেই একটা ডামি দল।’