CV Anand Bose: রাজ্যকে রাজধর্ম পালনের পরামর্শ দিয়ে ED আধিকারিকদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন বোস

সন্দেশখালিতে তৃণমূলি গুন্ডা শাহজাহান শেখের পোষা দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত ED আধিকারিকদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বিধাননগরের বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছন তিনি। কথা বলেন আক্রান্ত ইডির সহ অধিকর্তা রাজকুমার সাউয়ের সঙ্গে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাজকুমারের মাথায় ৬টি সেলাই পড়েছে। গুয়াহাটির এই আধিকারিককে রেশন দুর্নীতির তদন্তের জন্য কলকাতায় পাঠিয়েছিল ইডির সদর দফতর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাজকুমারের আঘাতের গুরুত্ব বুঝে তাঁকে আরও কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যার ফলে HDUতে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওই ইডি আধিকারিককে। এছাড়া আরও ২ ইডি আধিকারিকের মাথা ফেটেছে। তাঁদের ক্ষতেও এক বা একাধিক সেলাই করতে হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যান ইডির আধিকারিকরা। অনেক ডাকাডাকিতেও কেউ সাড়া না দেওয়ায় বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তখনই বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক শ’ নারী – পুরুষ দুষ্কৃতী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায়। প্রাণের আশঙ্কায় পাশের কলা বাগান দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। তখন তাঁদের পিছন থেকে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। ছোড়া হয় ইঁট – পাথর। হামলায় একাধিক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। এর পর গাড়িতে করে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ গাড়ি থামিয়ে ফের মারধর করা হয় তাঁদের। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে অটো রিকশয় করে এলাকা ছাড়েন তাঁরা। এর পর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়।

এই ঘটনার পর রাজ্যপালকে পদক্ষেপ করাতে আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকরী। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেওয়া উচিত রাজ্যপালের।

এর পর জারি এক অডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, ‘যে ভয়াবহ ঘটনার খবর সন্দেশখালি থেকে পেয়েছি তা উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। বর্বরতা ও তাণ্ডব বন্ধ করা গণতন্ত্রে যে কোনও সভ্য সরকারের দায়িত্ব। সরকার তার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে সংবিধান তার পথে চলবে। রাজ্যপাল হিসাবে এই ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আমি আমার সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষিত রাখছি। পেশিশক্তির প্রদর্শন ও কাগুজে বাঘদের দিয়ে কদমতাল করিয়ে বাংলার মানুষের কোনও উপকার হবে না। জঙ্গলরাজ ও গুন্ডারাজ শুধু মুর্খের স্বর্গে কাজ করে। বাংলা কোনও বানানা রিপাবলিক নয়। সরকারের তাদের পদক্ষেপ করা উচিত। ভোটপূর্ব এই হিংসা নিশ্চিতভাবে অবিলম্বে অবসান হওয়া উচিত। এই হিংসার দায় শুধুমাত্র বর্তায় সরকারের ওপর। সরকারের উচিত চোখ মেলে বাস্তবকে দেখা এবং যথাযথ পদক্ষেপ করা। নইলে তাদের এর ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত’।