Shankar Auddy: কোন পথে দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার, জানতে শংকরের আত্মীয়দের জেরা করতে পারে ED

রেশন দুর্নীতির টাকা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের নামে বিদেশে পাচারের অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শংকর আঢ্যকে গ্রেফতার করেছে ইডি। এর পর শংকর ও তাঁর পরিজনদের নামে ১৯টি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যার মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। সেই সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত শংকরের আত্মীয়দের দিকে এবার নজর দিতে চলেছে ইডি। যার মধ্যে শংকরের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা তো রয়েছেনই, রয়েছেন ভাই, ভ্রাতৃবধূ এমনকী মা-ও।

ইডি সূত্রে খবর, শংকর আঢ্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ৬টি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে এসআর আঢ্য ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড, অর্পণ ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, শংকর ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের মতো সংস্থা। এই সংস্থাগুলির কোনওটির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন শংকের স্ত্রী জ্যোৎস্না, কোনওটায় ছেলে শুভ, কোনওটায় আবার মেয়ে ঋতুপর্ণা।

শংকরের ভাই মলয়ও কিছু কম যান না। মলয়ের স্ত্রী তানিয়া আঢ্যর নামে রয়েছে ত্রিনয়নী ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। মলয়ের নামে রয়েছে আঢ্য ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। দম্পতির নামে অঞ্জলি আইসক্রিম প্রাইভেট লিমিটেড নামে গাইঘাটায় একটি কারখানাও রয়েছে।

ইডি সূত্রে খবর, দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার করতে নানা পন্থা নিয়েছিলেন শংকর আঢ্য। মলয় ও তানিয়ার সংস্থা আঢ্য ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ হয়ে দুবাইসহ অন্যান্য জায়গায় টাকা পাচার হয়েছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। কিছু ক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে বিদেশ থেকে সোনা আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। গোয়েন্দারা বলছেন, শংকরের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যার মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা রেশন বণ্টন দুর্নীতির।

কী ভাবে টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে তা জানতে শংকরের আত্মীয়দের জেরা করতে পারে ইডি।

রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে শুক্রবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বনগাঁয় শংকর আঢ্যর একাধিক ঠিকানায় হানা দেয় ইডি। প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর রাত ১২টা নাগাদ গ্রেফতার হন শংকর আঢ্য। গাড়ি করে শংকর আঢ্যকে নিয়ে বেরনোর সময় ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায় শংকরের অনুগামীরা। হামলায় ভাঙে ইডির গাড়ির কাচ। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়ি থেকে বেরনোর সময় শংকর আঢ্য বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তদন্তকারীদের বলেছি যেন সুবিচার হয়।’

শুক্রবার রাতে শংকর আঢ্যের গ্রেফতারির পর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য বলেন, ‘সারাদিন ব্যবসা নিয়ে প্রশ্ন করল। রাত ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ ইডির এক আধিকারিক এসে বললেন জ্যোতিপ্রিয় কোন কাগজে ওর নাম বলেছে। আপনাকে গ্রেফতার করা হল। আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। রেশন দুর্নীতির কিছু ও জানেই না।’ শনিবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের ED হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।