গঙ্গাসাগর মেলায় একইদিনে দুই পুণ্যার্থীর মৃত্যু ঘটল, ভিড়ের স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ঠাণ্ডা

পারদ নামছে ক্রমাগত। প্রবল ঠান্ডায় জবুথবু গোটা বাংলা। আর তাতেই কাঁপছে গঙ্গাসাগর মেলা। প্রত্যেক বছরই যেন গতবারের তুলনায় বেশি পূণ্যার্থী আসেন গঙ্গাসাগরে। এই আবহে মকরস্নানের আগেই উঠে এল পূণ্যার্থীদের অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান। গঙ্গাসাগরে পূণ্যার্থীদের যে সংখ্যা প্রকাশ্যে এসেছে সেটা অবিশ্বাস্য বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। রবিবার রাত ১২টা ১৩ মিনিট থেকে সোমবার দুপুর ১২টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত মকর সংক্রান্তির শাহি স্নানের যোগ আছে। আর তার মধ্যেই নেমে এল শোকের ছায়া। গঙ্গাসাগরের পথে শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়ে মৃত্যু হল দুই পুণ্যার্থীর।

এদিকে উত্তরপ্রদেশের বইরা এলাকার বাসিন্দা প্রহ্লাদ সিং (৭০) গঙ্গাসাগর মেলায় যাবেন বলে নামখানায় আসেন। ভেসেল ধরতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নামখানার ২ নম্বর পয়েন্টের জেটিঘাটে দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মীরা তাঁকে নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এতকিছুর পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গঙ্গাসাগরে। অনেকে বলছেন, এমন মৃত্যু বিরল। খুব ভাল যোগ রয়েছে মৃত্যুতে। অনেক পুণ্য করলে এমন মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে তিল ধারণের জায়গা নেই কোথাও গঙ্গাসাগর মেলায়। তবে এখানে সবরকম আপৎকালীন ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। সাগরে গিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে এসেছেন বলে খবর। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারদ পতন শুরু হয়েছে। এই ঠাণ্ডাতেই অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা প্রহ্লাদ সিং বলে মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা। তার মধ্যে এদিন ভোর থেকে উত্তুরে হাওয়ার জেরে পারদ নিম্নমুখী। এই পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে ভোরের আলো ফোটার আগে থেকে পুণ্যার্থীরা সাগরে ডুব দিতে শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন:‌ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে তৈরি জটিলতা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশিকায় আলোড়ন

এছাড়া নয়াদিল্লি থেকে গঙ্গাসাগরে এসেছিলেন চন্দ্র পাল (৬১)। বিকেল ৪টে নাগাদ কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাটে এসে পৌঁছন তিনি এবং তাঁদের কুড়ি জনের দল। হঠাৎ সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন চন্দ্র পাল। তাঁকে তড়িঘড়ি অস্থায়ী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর শুক্রবারও গঙ্গাসাগর এসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রাজস্থানের দোওসা এলাকার বাসিন্দা মোহনলাল প্রজাপতির (৫৭)। সব মিলিয়ে গঙ্গাসাগরে এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর প্রদীপের নিয়ন আলো, ধূপ, ধুনোর গন্ধে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মেতে উঠেছে মিলনতীর্থ সাগরমেলা।