মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে তৈরি জটিলতা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশিকায় আলোড়ন

আর হাতে বলতে অর্ধেক মাস। তারপরই শুরু হয়ে যাবে এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই চলতি মাসেই মিলবে অ্যাডমিট কার্ড। কিন্তু এই অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া নিয়েই জটিলতা শুরু হয়েছে। কারণ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কড়াকড়ি করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকা বা টিচার ইনচার্জদের মুচলেকা দিতে বলেছে। তবেই হাতে মিলবে অ্যাডমিট কার্ড। এমনকী এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কথা না শুনলে বুড়ো আঙুল চোষা ছাড়া উপায় থাকবে না। এমন নির্দেশিকা মানতে নারাজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ক্যাম্প অফিস থেকে অ্যাডমিট নিতে গিয়ে কোনও মুচলেকা দেওয়া হবে না বলে পাল্টা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। যদি এই টানাপোড়েন চলতে থাকে তাহলে ভোগান্তি হবে পড়ুয়াদের।

এদিকে এমন নির্দেশিকা যে আসতে পারে তা কল্পনা করতে পারছেন না স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকরা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, অ্যাডমিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে মুচলেকা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বৈঠকে বসেছে অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যাড হেডমিস্ট্রেসেস সংগঠন। অথচ সময় গড়িয়ে গিয়েছে। এখন যদি এটার মীমাংশা না হয় তাহলে চরম হেনস্থার শিকার হবে পরীক্ষার্থীরা। কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউশনে হয় কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত বৈঠক। সেখানেই অ্যাডমিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে মুচলেকা দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্দেশিকা জারি করে চুপচাপ আছে। অথচ গোটা বিষয়টি ঘটছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অগোচরে। এই আবহে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‌কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সবাই একমত হয়েছেন যে, অ্যাডমিট নেওয়ার সময় কোনও স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ওই মুচলেকা দেবেন না। এই রাজ্যের শিক্ষার ইতিহাসে কখনও পর্ষদ বা সংসদের পক্ষ থেকে কোনও অপমানজনক নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।’‌ ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করতে প্রধান শিক্ষক–শিক্ষিকা বা টিচার ইনচার্জদের ১০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ স্ত্রীর জীবনে এসেছে দ্বিতীয় প্রেম, চুক্তিপত্রে সই করিয়ে প্রেমিকের হাতে তুলে দিলেন স্বামী

এখন এই নির্দেশিকা বাতিলের দাবিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি, রাজ্য়ের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষকদের সংগঠন। কিন্তু কেন মুচলেকা চাওয়া হচ্ছে? সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য নবম শ্রেণিতেই পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। অভিযোগ, প্রত্যেক বছর সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দেখা যায় কিছু পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তাই এই বছর অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড পাওয়ার কথা।