Mamata Banerjee: ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক পদ নিয়ে নিজের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছেন মমতা : তৃণমূল

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জোটের মুম্বই বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ইন্ডিয়ার আহ্বায়ক করার প্রস্তাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জোটের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘ভারত-জোট ইস্যুতে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কথা বলবেন। কিন্তু আমি যদি সঠিক হই, তবে নীতীশ কুমারকে আহ্বায়ক করার প্রস্তাব নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই জোটের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছেন।’

আসন ভাগাভাগির এজেন্ডা এবং জোট সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পর্যালোচনা করতে শনিবার বিরোধী নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) ব্লকের নেতাদের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ভার্চুয়াল বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে জোটের চেয়ারপার্সন হিসাবে মনোনীত করা হয়। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, যাঁর নাম আহ্বায়ক হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তিনি তাঁর নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, যে তিনি কেবল তখনই এই দায়িত্ব নেবেন যখন সমস্ত দল ঐকমত্যে পৌঁছাবে।

ওই তৃণমূল নেতা বলেন, “তৃণমূল জোটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ সিনিয়র মুখ। যখন কোনও যোগাযোগ চলছে তখন বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া সংঘঠিত হয়। এই প্রক্রিয়াগুলির প্রতিটিকে প্রকাশ্যে আনা এবং সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা সর্বদা যুক্তিসঙ্গত নয়,।’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শনিবার অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া-জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেননি কারণ তিনি আগে থেকে ঠিক করা কিছু় কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শনিবারের বৈঠকের খবর পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ মুহূর্তে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তার আগে থেকেই কিছু কাজ নির্ধারিত ছিল। মূল বিষয় হচ্ছে জোটসঙ্গীদের মধ্যে যোগাযোগ আছে কি না।’

বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জোটের সমালোচনা করে বলেছে যে জোটের শরিকদের মধ্যে কোনও ঐকমত্য নেই।

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন,’ছিদ্র যুক্ত নৌকার ক্যাপ্টেন হতে কেউ চায় না। যদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশার আলোও থাকত, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তিনি ইন্ডিয়া-প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার অর্থ এই যে জোটের জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। তারা খাড়্গেকে বলির পাঁঠা হিসাবে খুঁজে পেয়েছিল। এমনকি নীতীশ কুমারও বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই প্রশ্ন করতে পারেন। বহরমপুরে কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “প্রত্যেকে কোথায় যাচ্ছে বা যাচ্ছে না তা জানা আমার কাজ নয়।’

‘তিনি শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি ঠিক করতে পারছেন না যে তিনি কোন নৌকায় যাবেন- ইন্ডিয়া নাকি এনডিএ? এ জন্য তিনি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বিজেপি এই চক্রান্ত করছে, যাতে বিজেপি জোট সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়।’

তৃণমূল অবশ্য পাল্টা আক্রমণ করে বলেছে যে, বিজেপি প্যানিক বোতাম টিপেছে কারণ ইন্ডিয়া এবং তৃণমূল তাদের জন্য সত্যিকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন,’ বিজেপি কেন এ নিয়ে উদ্বিগ্ন? এটা ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়। শুধু তৃণমূলই আজ অনুপস্থিত ছিল না। দলের আরও কয়েকজন নেতাও বৈঠকে যোগ দেননি। এটা হতে পারে যে তারা যোগাযোগের জন্য বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করেছিল।’