কুয়েটের ৫০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা, ২১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি ও লালন শাহ হল থেকে ২১ জনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) শিক্ষার্থী তাহমিদুল হক ইশরাক বাদি হয়ে মারপিট ও জীবননাশের হুমকির অভিযোগে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ শুভসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, সাফায়েত সাইমুম, নিলান খালেক পারাবার, আব্দুল্লাহ ইবনে জয়নাল, শাহরিয়ার ফেরদৌস ওশান, শাহনেওয়াজ পারভেজ শুভ, তৈয়ব ইযাসির নিলয়, জুনায়েত হক সরকার, জুবাইদুর হোসেন নাঈম, মো. সাব্বির হোসেন, মো. আদনান ইসলাম (শামস), তাহমিদুল হক ইশরাক, মিনহাজুর রহমান আবরার, ফজলে রাব্বি, সাদিক বিন ফারুক, আবির হাসান, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, অমিত কুমার ঘোষ, অরিত্র দেবনাথ পৃথু, মেফতাউল মাহমুদ, সুদীপ্ত তালুকদার ও মিজানুর রহমান (মুহাসিন)। লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ড. মো. আব্দুল হাফিজ মিয়া স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

প্রভোস্ট ড. মো. আব্দুল হাফিজ মিয়া বলেন, রোববার গভীর রাতে লালন শাহ হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় হল ও ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলারক্ষায় ২১ ছাত্রকে হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. নূরুন্নবী মোল্লা, আইইএম বিভাগের প্রফেসর ড. মো. রফিকুজ্জামান, এমই বিভাগের প্রফেসর ড. আশরাফুল ইসলাম, বিইসিএম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকরামুল হক, এলই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রঞ্জন কুমার রাহা। কমিটিকে যথাসময়ের মধ্যে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন ভাইস চ্যান্সেলরের নিকট দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এর মধ্যে কুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি রুদ্র নীল সিংহর লোকজনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের লালন শাহ হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। রোববার গভীর রাতে হলের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়।

আহতরা হলেন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ ব্যাচের তাহমিদুল হক ইশরাক, সিভিল ১৮ ব্যাচের যোবায়ের হোসেন নাইম, মেকানিক্যাল ১৭ ব্যাচের সাফায়েত সাইমুম ও ১৮ ব্যাচের নিলান খালেক পারাবার।

মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, শুভানুদেব অংকন বড়াল, দীপ্রদাস কুন্ডু, এন নাজমুস সাকিব, তানবীন হাসান, অভিজিত ভট্টাচার্য, ফুয়াদ, জয়বোস, সীমান্ত অদিত্য, এহসান মল্লিক আকাশ, রাকিব বিন মাহাবুব তালুকদার, সুমিত দাস।

খুলনার খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার আহত শিক্ষার্থী তাহমিদুল হক ইশরাক বাদি হয়ে কুয়েট শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্র নীল সিংহসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনি মারপিট ও জীবননাশের হুমকির অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছেন। 



শাকিল/সাএ