North Bengal News: মুখ্যমন্ত্রীর পাট্টা প্রকল্পের বিরোধিতায় উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিক ও আধিবাসী সংগঠন

চা সুন্দরী প্রকল্পের বদলে বাগান শ্রমিকদের জমির পাট্টা গিয়ে সেখানে বাড়ির বানানোর জন্য এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পাট্টাকে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের, সূত্রপাত হয়েছে উত্তরবঙ্গে। বেশ কয়েকটি চা শ্রমিক ও আদিবাসী সংগঠনের অভিযোগ, পাট্টা দেওয়ার নাম করে আসলে চাবাগানের বসবাসকারী চা শ্রমিকদের এলাকা থেকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। 

বুধবার উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি চা শ্রমিক আদিবাসী সংগঠন সাংবাদিক বৈঠক করল কলকাতা প্রেস ক্লাবে। সংগঠনগুলির মতে, পুর প্রকল্পটিই ধোঁয়াশা ভরা। সরকার পাট্টা ৫ ডেসিমেল করে পাট্টা দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কারও ৮ ডেসিমেল, ১০ ডেসিমেল করে জমি রয়েছে। সংগঠনগুলির দাবি, যার যে পরিমাণ জমি রয়েছে, তাকে সে পরিমাণ জমি দেওয়া হোক। 

সংগঠনের এক কর্মকর্তার মতে, ‘আমরা চাইছি আমাদের রায়ত পাট্টা দেওয়া হকো। কিন্তু সরকার এখানে উদ্বাস্তু পাট্টা দিচ্ছে।আমাদের এখানেই আপত্তি। আমরা তো রিফউজি নয়। আমরা তো বাংলাদেশ থেকে আসিনি। ’

সংগঠনগুলির অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে জমির পাট্টা দেওয়া হচ্ছে তা চা বাগান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে, ফলে চা শ্রমিকে ওই পাট্টা দেওয়া জমিতে থাকতে হলে ভিটেমাটি ছেড়ে  এক কিলোমিটার দূর গিয়ে থাকতে হবে। 

তারা জানিয়েছে, বর্তমানে তারা যে এলাকায় থাকতেন সেখানে বাড়তি জমিতে শাকসবজি ফলিয়ে পশু পালন করে বাড়তি আয় হতো। ফলে চাবাগান থেকে আয় ছাড়াও এই বাড়ির বাড়তি জমি থেকে আয় হতো। কিন্তু অন্যত্র পাট্টা নিয়ে চলে গেলে সেই আয় বন্ধ হয়ে যাবে।

যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষে থেকে জানানো হয়েছে, পাট্টা দেওয়া জমি হোম স্টে- কিচেন গার্ডেন তৈরির কাজেও  লাগানো যাবে। কিন্তু এতে তারা খুব একটা ভরসা পাচ্ছেন না বলেই জানিছেন চাশ্রমিক ও আদিবাসী সংগঠনগুলির নেতারা।

তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চা উৎপাদনকারী এলাকার প্রতিটি পরিবার ২ লক্ষ টাকা করে পাবে।  পাট্টা পাওয়া জমিতে বাড়ি তৈরির জন্য ১,২০,০০০ টাকা করে দেওয়া হবে। সাড়ে তিন লক্ষ চা শ্রমিক এবং অশ্রমিকের বাড়ির জন্য লাগবে ৪,২০০ কোটি টাকা। তাদের প্রশ্ন, এই পরিমাণ অর্থ কী বাজেটে বরাদ্দ করা আছে?

তাঁদের অভিযোগ, বাগান থেকে চা শ্রমিকদের সরিয়ে দিয়ে আসলে তা অন্য কাজে লাগাতে চায় সরকার। সেই কারণে সরকারের এই প্রকল্প। তারা পাঁচ এই ডেসিমেল পাট্টা প্রকল্প অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে। 

এই নিয়ে মুখ্যসচিবকে একটি স্মারকলিপিও দেবে সংগঠনগুলি।