‘‌আপনি আমার ছেলেকে মেরেছেন’‌, চিকিৎসককে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাড়া করে মারলেন সন্তানহারা মা–বাবা

আবার ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। আর তার জেরে চিকিৎসকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন সন্তান হারানো মা–বাবা। দু’‌মাস আগে ছেলেকে হারিয়েছেন তাঁরা। তখন থেকেই তাঁদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসা প্রাণ গিয়েছে তাঁদের সন্তানের। আর এই মৃত্যুর পিছনে গাফিলতি ছিল চিকিৎসকের। এমন অভিযোগও তুলেছেন মৃত সন্তানের মা–বাবা। এমনকী সুবিচার পেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। তবে এবার তাঁরা বাগে পেলেন চিকিৎসককে।

এদিকে যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁকে অবশেষে বাগে পেয়ে গেলেন মৃত সন্তানের বাবা–মা। আর হাতের কাছে চিকিৎসককে পেয়ে গর্জে উঠলেন মৃত সন্তানের অভিভাবকরা। মাথা ঠিক রাখতে না পারায় সন্তানহারা বাবা–মা ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই চিকিৎসকের উপর। আর এই ঘটনায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে রীতিমতো ছুটতে দেখা গেল ওই চিকিৎসককে। এমন কাণ্ড যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। দৃশ্য দেখা অনেকে হাসলেও আসলে তাঁদের জীবনে এটা একটা অপূরণীয় ট্র‌্যাজেডি। তাই ওই চিকিৎসককে নাগালে পেয়ে মারধর করেছেন বৃদ্ধ দম্পতি বলে অভিযোগ।

অন্যদিকে মৃত যুবকের নাম দীপঙ্কর পাল (‌২৩)‌। ওই যুবক ক্যানসারে ভুগছিলেন। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আর ২৩ নভেম্বর ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু তারপর বাড়ি ফিরে ২৯ নভেম্বর মৃত্যু হয় যুবকের। সন্তানহারা বাবা দেবাশিস পালের অভিযোগ, ‘‌ছেলের চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করে চারটি উচ্চমাত্রার কেমো দেওয়া হয়। তাতেই মৃত্যু হয় দীপঙ্করের। এই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দফতরে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পোর্টালে অভিযোগ দায়ের করেছি। তাই বুধবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়।’‌

আরও পড়ুন:‌ দেবী শেঠির হাসপাতালকে বিপুল পরিমাণ জমি দিল রাজ্য সরকার, নিউটাউনে হবে নির্মাণ

সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা: স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হয়। তাঁকে সামনে দেখেই সদ্য সন্তানহারা বাবা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন চিকিৎসককে তাড়া করেন বৃদ্ধ দম্পতি। আর চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‌আপনি আমার ছেলেকে মেরেছেন। আপনাকে ছাড়ব না। আজ আমরা নিঃস্ব হয়েছি।’‌ মেডিক্যাল কলেজের সুপারের বিল্ডিংয়ে দৌড়তে থাকেন সকলে। একবার কাছে পেয়ে চিকিৎসককে নিগ্রহও করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও মারধর করেননি বলে জানিয়েছেন দেবাশিস পাল ও তাঁর স্ত্রী। গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনে জানানো হয়েছে।