রাজধানীতে সূর্যের দেখা মিললেও বাড়ছে না তাপমাত্রা

দীর্ঘদিন পর সূর্যের দেখা পেলো রাজধানীবাসী। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে রাজধানীতে সূর্যের দেখা মেলে। এতে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমেছে। তবে আগের তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে দেশের কিশোরগঞ্জ ও নওগাঁ জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা আছে আট অঞ্চলে আর ১০ ডিগ্রিতে আছে ছয় অঞ্চল। এই অবস্থায় দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। 

বুধবার ভোর ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ১০ ডিগ্রির নিচে থাকা অঞ্চলগুলো হলো দিনাজপুরে ৮, নীলফামারীর ডিমলায় ৮ দশমিক ২, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭, কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৮ দশমিক ৭, কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯, নওগাঁর বদলগাছিতে ৯ দশমিক ৫, রংপুরে ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১০ ডিগ্রিতে থাকা জেলাগুলোর মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১০ দশমিক ২, সিলেট ও মাদারীপুরে ১০ দশমিক ৫, রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৬, পাবনার ঈশ্বরদীতে ১০ দশমিক ৮, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

 

এদিকে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৮, যা গতকাল ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা বাতাস থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে ঢাকার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। দুপুরের দিকে বাতাস না থাকায় ঠান্ডা যেন জমে ছিল। এই শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে রাজধানীর শ্রমজীবী ও রাস্তার ফুটপাতে থাকা উদ্বাস্তু মানুষ।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

কুয়াশার বিষয়ে বলা হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

শৈত্যপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, কিশোরগঞ্জ ও নওগাঁ জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে দেশের কোথাও কোথাও।

শুক্রবারের পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানান, আজ সকাল থেকে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি। বিশেষ করে দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সেসব এলাকার তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে।

তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি বছরের শীতলতম মাস। সে হিসেবে এই মাসে ঠান্ডা বেশিই থাকার কথা। এই বছরই ঢাকার তাপমাত্রা সবচেয়ে নিচে এটা বলা যাবে না। এর আগেও ঢাকার তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রিতেও নেমেছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতে তাপমাত্রা এক দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে। তবে মাসের শেষে আবার কমে যাবে।’