Pakistan vs Iran standoff: দেশেই ‘হেয়’ সেনাকে, মুখ বাঁচাতে ইরানে হামলা পাকের? ৯ জনের মৃত্যুর পর কড়া তেহরান

নিজেদের মুখ বাঁচাতেই কি পালটা হামলা চালাল পাকিস্তানি সেনা? ইরানের ভূখণ্ডে পাকিস্তানের এয়ারস্ট্রাইকের পর সেই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ওটাই একমাত্র কারণ না হলেও পাকিস্তান যে দু’দিনের মধ্যে এয়ারস্ট্রাইক চালাল, সেটার নেপথ্যে আছে ওই বিষয়টা। সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ আবদুল্লা খান বলেন, ‘প্রবল চাপে রয়েছে (পাকিস্তান) সরকার এবং সেনা। (মঙ্গলবারের) এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে নিজেদের মিডিয়ায় উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ইরান। (সেই পরিস্থিতিতে) পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে আগের মতো আর শক্তিশালী নেই সেনা। তার জেরে পাকিস্তানকে প্রত্যুত্তর দিতেই হত।’

আর সেই প্রত্যুঘরের ঘটনায় কমপক্ষে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো করা হয়েছে। পাকিস্তানি সেনার দাবি, ‘কিলার ড্রোন’, রকেট এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্রের মাধ্যমে ইরানের সিস্তন এবং বালুচেস্তন প্রদেশে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং বালোচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের ঘাঁটিতে সেই হামলা চালানো হয়েছে। আর যে মিশনের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মার্গ বার সর্মাচার’। ইরানি ফারসি ভাষায় ‘মার্গ বার’-র হল ‘কারও মৃত্যু’। আর স্থানীয় বালোচ ভাষায় ‘সর্মাচার’-র অর্থ হল গেরিলা। যে ভাষা ব্যবহার করে থাকে জঙ্গিরা।

আরও পড়ুন: Pakistan’s airstrike in Iran: পাকিস্তানের পাল্টা এয়ারস্ট্রাইক ইরানে, লক্ষ্য বালুচ জঙ্গি ঘাঁটি-রিপোর্ট

অর্থাৎ ইরান যেমন দাবি করেছিল, সেরকম সুরেই পাকিস্তান দাবি করেছে যে জঙ্গিদের উপরই হামলা চালানো হয়েছে। তাদের নিশানায় ইরানের সাধারণ মানুষ ছিলেন না। আর ওই হামলায় ইরানের কোনও নাগরিকের মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করেছেন সিস্তন এবং বালুচেস্তন প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর আলি রেজা মারহামাটি। তাঁর দাবি, সারাভান টাউনের কাছে পাকিস্তানের হামলায় তিন মহিলা, চার শিশু এবং দুই পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।

কিন্তু ইরানের ভিতরে পাকিস্তান হামলা চালানোর বিষয়টি যে কোনওভাবে মেনে নেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে তেহরান। পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে। ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাসের কানানি জানিয়েছেন যে তেহরানে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে (ইতিমধ্যে তাঁকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান) তলব করা হয়েছে। ইরানে পাকিস্তানের চালানো হামলা নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেইসঙ্গে তাঁর কাছে প্রতিবাদ জানানো হবে দাবি করেছেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।

সমস্যাসংকুল ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত

এমনিতে পাকিস্তান এবং ইরানের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০০ কিলোমিটার। আর সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। অনায়াসে সীমান্ত পেরিয়ে যায় জঙ্গি ও পাচারকারীরা। সেটা দু’দেশের প্রশাসনের অজানা নয়। সেইসবের মধ্যেই দু’দেশই একে অপরের উপর এয়ারস্ট্রাইক চালানোয় ইরান এবং পাকিস্তানের সামরিক ব্যবস্থা, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আরও পড়ুন: India on Iran’s attack in Pakistan: ‘আমরা বুঝি’, পাকিস্তানে হামলা নিয়ে ঘুরিয়ে ইরানকে সমর্থন ভারতের, খুঁচিয়ে দিল ‘ঘা’

শুধু তাই নয়, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রবল চাপে আছে ইরান এবং পাকিস্তান। ইসলামিক স্টেটের আক্রমণের পর ‘অ্যাকশন’-র জন্য ঘরোয়া রাজনীতিতে চাপের মধ্যে আছে ইরান সরকার। আবার আগামী মাসেই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে। যা পাকিস্তানকে পালটা এয়ারস্ট্রাইক চালাতে বাধ্য করেছে। সঙ্গে সেনাকেও নিয়ে পাকিস্তানের জনমানসে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল, সেটাও ইরানে পালটা এয়ারস্ট্রাইক চালানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।