পানীয় জলের জন্য কি এবার টাকা দিতে হবে?‌ মিটার বসতেই আতঙ্কে হুগলির মানুষজন

এবার থেকে জল পান করতে গেলে লাগতে পারে টাকা! এই আতঙ্কেই ভুগছেন হুগলির কোন্নগরের মানুষজন। তবে এই আতঙ্কে ভোগার কারণও আছে যথেষ্ট। বাড়ির কলের মাথায় বসানো হয়েছে মিটার। এবার থেকে জল ব্যবহার করতে হবে অত্যন্ত মেপে। মিটার রিডিং অনুযায়ী যেভাবে আসে বিদ্যুতের বিল। ঠিক সেভাবে আসতে চলেছে জলের বিল। হুগলির একাধিক পৌর এলাকায় বসেছে জলের কলের মাথায় মিটার। হুগলির কোন্নগর পৌরসভায় বসছে প্রায় ৬০০০ জলের কলের মিটার। তার জন্য দেওয়া হয়েছে নতুন পাইপ লাইন। তবে নতুন মিটার–সহ কল বসানোর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও টাকা নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু মিটার বসলে তো আগামী দিনে জলের জন্য টাকা দিতে হবে বলে দুশ্চিন্তা করছেন মানুষজন।

এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষজন নানা কথা বলছেন। গৃহবধূ মিঠু রায় বলেন, ‘‌প্রত্যেকদিন কাজের জন্য আমাদের জলের প্রয়োজন হয়। সেখানে যে জল পানীয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় সেই জল দিয়েই অন্যান্য কাজ করতে হয়। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে বিদ্যুতের বিল এবং অন্যান্য বিল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে পানীয় জলের জন্য যদি এবার আলাদা বিল দিতে হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে’‌। এই কথা শুধু এক গৃহবধূর নয়। এলাকার প্রবীণ মানুষজন থেকে শুরু করে গৃহকর্তাদের মুখেও শোনা যায় একই কথা।

অন্যদিকে এই মিটার বসিয়ে টাকা নেওয়া হবে কিনা তা বলেনি কোন্নগর পুরসভা। তাই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তবে জলের অপচয় ঠেকাতেই এই মিটার বসানো হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সমীর হাজরার কথায়, ‘‌দিদির উপর আস্থা আছে আমাদের। রাজ্য সরকারে আসার পর থেকে দিদির সরকার সমস্ত জলকর মুকুব করেছিলেন। তিনি কথা দিয়েছিলেন জলের জন্য কোনও টাকা বা কর সাধারণ মানুষকে গুণতে হবে না। সেখানে যদি জলকর চালু হয় তাহলে আমি আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবেন।’‌ এই কথাতেও আবার অনেকে ভরসা করছেন।

আরও পড়ুন:‌ সরকারি স্কুলগুলি ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে, শিক্ষা দফতরে চিঠি লিখে একাধিক প্রস্তাব শিক্ষকদের

তবে কর দিতে হবে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গিয়েছে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে কোন্নগর পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, ‘‌অমৃত দুই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ৬০০০ কলের মিটার বসানোর নির্দেশ এসেছে। তাই আমরা মিটার বসাচ্ছি। আমার ধারণা যখন মিটার বসানো হচ্ছে তখন তার পিছনে নিশ্চয়ই কোন অভিসন্ধি আছে। অমৃত তিন প্রকল্প চালু হতে না হতেই মিটার থেকে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থাপনাও চালু হবে। তবে ২০১১ সালের পর থেকে এই জলকর মুকুব করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের নির্দেশে আবার একই পথে হাঁটতে চলেছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী যদি তাদেরকে একবার নির্দেশ দেন তাহলে তারা এই মিটার লাগানো জলের বিপক্ষে দাঁড়াবেন।’‌