যশোরের চৌগাছায় হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু, তা নির্ণয়ে হায়দার আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধের লাশ তিন মাস পর কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার মাকাপুর গ্রামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ তুলেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
লাশ তোলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বৃদ্ধের স্বজন ও স্থানীয়রা ভিড় জমায়। স্বজনদের দাবি, হায়দার আলীর রেখে যাওয়া সম্পদ নিয়ে বিরোধের জেরে লন্ডনপ্রবাসী ছেলেকে হত্যা মামলায় জড়াতে লাশ তোলার আবেদন জানিয়েছেন সন্তানরা।
গত বছরের ৯ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চৌগাছা উপজেলার মাকাপুর গ্রামের হায়দার আলী। স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে পরদিন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই সন্তানরা মাকে দিয়ে বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছোট ভাই ব্যারিস্টার এম মর্তুজার বিরুদ্ধে মামলা করান। ওই মামলায় আদালত হায়দার আলীর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে সিআইডিকে দায়িত্ব দেন। এরপর সিআইডি হায়দার আলীর লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাকাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
মাকাপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হায়দার আলীর রেখে যাওয়া সম্পদ নিয়ে বিরোধের কারণে স্ত্রী-সন্তান আরেক সন্তান; যিনি লন্ডনপ্রবাসী তাকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা করে লাশ তোলার আবেদন করেছেন। হায়দার আলী জীবিত থাকা অবস্থায় তারা নির্যাতন করেছিলেন। মৃত্যুর পর এখন এমন কাজ করছেন। লন্ডনপ্রবাসী যে ছেলে বাবার জন্য অনেক কিছু করেছেন, তাকেই মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
হায়দারের আত্মীয় শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হায়দার আলী বৃদ্ধ মানুষ ছিলেন। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। অথচ সম্পদের লোভে সন্তানরা তাদের প্রবাসী ভাইকে ফাঁসাতে মাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছেন। আমরা এমন ঘটনা কখনও দেখিনি। এটি আসলে সাজানো ঘটনা।’
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত খান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে সিআইডির উপস্থিতিতে লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হবে।’
সম্পদ নিয়ে সন্তানদের বিরোধের ব্যাপারে জানতে চাইলে কোনও কথা বলতে রাজি হননি মামলার বাদী হায়দার আলীর স্ত্রী। এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন সন্তানরা।