সোনির সঙ্গে সংযুক্তিকরণের চুক্তি ভেঙে গিয়েছে। এরই মধ্যে এবার জি এন্টারটেনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, এর আগেই এই সংযুক্তিকরণ চুক্তির থেকে ২০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল জি-এর বিরুদ্ধে। সেবি এই নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। এই আবহে সিএনবিসি টিভি১৮-এর রিপোর্টে দাবি করা হল, সোনি-জি চুক্তিতে ২০০ কোটি নয় বরং ১০০০ কোটির তছরুপ করেছে জি এন্টারটেনমেন্ট। এই আবহে দিএ কর্তা পুনীত গোয়েঙ্কা এবং জি-এর কর্ণধআর সুভাষ চন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাতে চলেছে সেবি। রিপোর্ট অনুযায়ী, পুনীত এবং সুভাষের বিরুদ্ধে তদন্তের শেষ পর্যায়ে আছে সেবি। জি এন্টারটেনমেন্টে তাঁদের ভূমিকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই আবহে পুনীতের ওপর জরিমানা ধার্য করা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই সেবির তদন্ত শেষ হয়ে যাবে। (আরও পড়ুন: রিপাবলিকান প্রাইমারিতে ফের বড় জয় ট্রাম্পের, ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকি পিছিয়ে কতটা?)
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীর নামে FIR, গুয়াহাটিতে পুলিশ-কংগ্রেস সংঘর্ষে কড়া পদক্ষেপ হিমন্তের
১০ বিলিয়ন ডলারের সংস্থা তৈরি হওয়ার কথা ছিল জি এবং সোনির সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে। মার্জার সম্পন্ন হলে নয়া সংস্থার অধীনে থাকত ৭০টি চ্যানেল। তবে এই মার্জার আর হবে না বলে সম্প্রতি জানিয়ে দেয় জাপানের সংস্থা সোনি। তাদের তরফ থেকে জি-কে চুক্তি বাতিলের চিঠি পাঠানো হয় সম্প্রতি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই নয়া সংস্থ স্থাপনের কথা ছিল। তবে ডেডলাইন পার হলেও সোনি এবং জি-র সংযুক্তিকরণ সম্ভব হয়নি। এই আবহে নয়া বছরে জি-এর হাত ছাড়ার কথা জানায় সোনি।
এর আগে দুই মিডিয়া সংস্থার সংযুক্তিকরণের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সবুজ সংকেত মিলেছিল ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। এই আবহে গত ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল বা এনসিএলটি অনুমোদন দিয়েছিল জি এবং সোনির সংযুক্তিকরণে। এই সবুজ সংকেত আসতেই শেয়ার বাজারে জি-এর স্টকের দর ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংযুক্তিকরণ আর বাস্তবায়িত হবে না। এর আগে জি ও সোনির সংযুক্তিকরণের জন্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সেই ডেডলাইন পার হয়ে যায়। সেই সময় সোনির এক কর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, যে গতিতে সংযুক্তিকরণের কাজ চলছে, তাতে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। তবে এই চুক্তি সম্পন্নে বিলম্বের মাঝে সংযুক্তিকরণ থেকে সরে দাঁড়াল সোনি।
এর আগে জি এবং সোনির সুংযুক্তিকরণে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে আবেদন জানিয়েছিল ঋণ প্রদানকারী অ্যাক্সিস ফিন্যান্স, জেসি ফ্লাওয়ার অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, আইম্যাক্স কর্পোরেশন এবং আইডিবিআই ট্রাস্টিশিপ। তবে গত অগস্টে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনাল। এই আবহে দুই মিডিয়া সংস্থার সংযুক্তিকরণের পথে বাধা দূর হয়েছিল গত বছরই। এই দুই মিডিয়া সংস্থা মিলে যে বিশাল সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে, এর মূল্য হওয়ার কথা ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। দেশের সর্ববৃহৎ এন্টারটেনমেন্ট সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশের কথা ছিল এই সংস্থার। তবে এরই মাঝে এবার রিপোর্টে দাবি করা হয়, মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্সের সাথে জুড়তে চলেছে ডিজনি-স্টার। ইতিমধ্যেই লন্ডনে এই সংক্রান্ত প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে গত ডিসেম্বরে। তখন জানা যায়, ডিজনি স্টার এবং ভায়াকমের মার্জারের ফলে বিনোদন জগতে সেটাই হবে সবথেকে বড় মিডিয়া সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে সোনি আর জি-এর সঙ্গে মার্জারে যেতে চাইছে না। আর এসবের মাঝেই জি-এর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। সেবির তদন্তে তা পুরোপুরি প্রমাণত হলে আরও বিপাকে পড়বে জি।