Padma Shri for Purulia’s Gaach Dadu: সাইকেলে চেপে ন্যাড়া জমিতে রোজ বসান গাছ, পদ্মশ্রী পেলেন পুরুলিয়ার সেই ‘গাছদাদু’!

সাইকেলে চেপে নতুন-নতুন জায়গায় গিয়ে ন্যাড়া জমিতে প্রতিদিন গাছ বসান। সেভাবেই ৫,০০০-র বেশি গাছ বসিয়ে ফেলেছেন। আর এবার পদ্মশ্রীতে ভূষিত হলেন বাঘমুণ্ডি ব্লকের সিন্দরি গ্রামের সেই ‘গাছদাদু’ দুখু মাঝি। ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পদ্ম পুরস্কারের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে জ্বলজ্বল করছে ৭৮ বছরের ‘দাদু’-র নাম। সামাজিক কাজ (পরিবেশ – বৃক্ষরোপণ) বিভাগে তাঁকে পদ্মশ্রী দেওয়া হয়েছে। তাঁর পুরস্কারের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘একজন পরিবেশবিদ, যিনি বৃক্ষরোপণ করতে এবং সবুজ ভবিষ্যতের জন্য সচেতনতা বাড়াতে নিজের জীবনের পাঁচটা দশক উৎসর্গ করে দিয়েছেন।’

আর সত্যিই পুরো পৃথিবীর যাতে ভালো হয়, সেজন্য নিজের জীবনের পাঁচটা দশকেরও বেশি সময় উৎসর্গ করে দিয়েছেন ‘গাছদাদু’। মাত্র ১২ বছর থেকেই ‘গাছদাদু’-র লড়াই শুরু হয়েছে। আজ ৭৮ বছরেও নিজের লড়াই, নিজের ব্রতে অবিচল আছেন। তাই তো আজও সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কোনও ন্যাড়া বা ফাঁকা জমি দেখলেই বসিয়ে ফেলেন গাছ। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘প্রতিদিন নিজের সাইকেলে চেপে নতুন-নতুন জায়গায় গিয়ে ফাঁকা জমিতে ৫,০০০-র বেশি বটগাছ, আমগাছ এবং জামগাছ বসিয়ে ফেলেছেন (গাছদাদু)।’

আজ থেকে ৬৬ বছর আগে যখন গাছ বসাতে শুরু করেছিলেন ‘গাছদাদু’, সেইসময় মূলত লাক্ষা চাষের জন্য প্রয়োজনীয় কুসুম, কূল বসাতেন। পরবর্তীতে আরও অনেক গাছের চারা রোপণ করতে থাকেন। বটগাছ, আমগাছ, জামগাছ, পলাশ গাছ, কাঁঠাল গাছ, কৃষ্ণচূড়া গাছের মতো বিভিন্ন গাছ বসিয়ে আসছেন। আর শুধু যে গাছের রোপণ করে আসছেন, তা নয়। নিজে হাতে গাছের পরিচর্যা করেন। নিজের সন্তানের মতো ‘মানুষ’ করেছেন অসংখ্য গাছকে। এমনকী বন বিভাগের অসংখ্য গাছের কাছে ভগবানের দূত হয়ে হাজির হয়েছেন ‘গাছদাদু’।

আরও পড়ুন: Padma Vibhushan for ORS pioneer Dilip Mahalanabis: মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ পেলেন ORS-র স্রষ্টা দিলীপ মহালানবীশ

কিন্তু বৃহস্পতিবারের আগে পর্যন্ত সেই কাজের জন্য কোনও স্বীকৃতি পাননি। বরং আর্থিক অনটনের মধ্যেই সংসার চালাতে হয়েছে। তাতে অবশ্য পরোয়া করেননি ‘গাছদাদু’। কোনও স্বীকৃতি, কোনও প্রচার, কোনও পুরস্কারের আশা না করেই পৃথিবীকে আরও কিছুটা সবুজ করে তোলার লড়াই লড়ে গিয়েছেন, যাতে আগামী প্রজন্ম আর একটু ভালো জীবন পায়, যাতে আগামী প্রজন্ম কিছুটা স্বস্তি পায়। সেই আগামী প্রজন্ম তাঁকে চিনবে কি, জানবে কি, সেটার কখনও পরোয়া করেননি।

আরও পড়ুন: Padma awards 2023: প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে ঘোষিত হল পদ্মশ্রীর তালিকা, সম্মানে ভূষিত এরাজ্যের কতজন?

আর সেই লড়াইয়ের জন্য তাঁকে স্যালুট জানিয়েছে কেন্দ্র। পদ্মশ্রী সম্মানের বিবরণে কেন্দ্রের তরফে বল হয়েছে, ‘আর্থিক অনটনের জন্য নিজের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। কিন্তু গাছ চুরি রুখতে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া বের করার ক্ষেত্রে সেটা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। (পরিবেশের জন্য) গাছের গুরুত্ব যে কতটা, সেটা বোঝানোর ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি সেই বিষয়টি।’