Indian tectonic plate: হিমালয়ের তলে ভাঙছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট, দু-টুকরো হতে পারে তিব্বত

বড়সড় আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে। হিমালয় পর্বতের সৃষ্টি নিয়ে প্রচলিত সব ধ্যানধারণা বদলে যেতে পারে। নয়া এক গবেষণায় অন্তত তেমনই তথ্য উঠে আসছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন শক্তির ফলে সৃষ্টি হয়েছিল সেই সম্বন্ধে বদলে যেতে পারে আমাদের প্রচলিত ধ্য়ানধারণা। 

সম্প্রতি সান ফ্রান্সিসকোয় আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। টেকটোনিক কার্যকলাপের এই মডেলটি তৈরি করেছে চীনের ওশান ইউনিভার্সিটির ভূপদার্থবিদ লিন লিউয়ের নেতৃত্বাধীন এক গবেষণা দল।

এতদিন ভূ-বিজ্ঞানীরা জানতেন, ভারতীয় প্লেটটি আন্ডারপ্লেটিং প্রক্রিয়ায় ইউরেশীয় প্লেটের নিচে পিছলে ঢুকে যাচ্ছে। নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় প্লেটের নিচের দিকের অংশ ইউরেশীয় প্লেটের নিচে ঢুকে গেলেও, তিব্বত এলাকায় এই প্লেটের ওপরের অংশগুলো ক্রমাগত সংঘর্ষের মুখে পড়ছে। আর এতে করে বেঁকে যাচ্ছে এবং ভেঙেও যাচ্ছে।

কিন্তু নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, তিব্বত মালভূমির নিচে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি আসলে দুই ভাগে ভেঙে যাচ্ছে। আর এই ক্রমাগত সংঘর্ষের কারণে বিকৃত হচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের ওপরের অংশ। যখন কোনো মহাসাগরীয় টেকটোনিক প্লেট ভারী ও ঘন হয়, তখন সেটি তুলনায় হালকা মহাদেশীয় প্লেটের নিচে ঢুকে যায়। এই প্রক্রিয়াকে বলে সাবডাকশন। 

টেকটোনিক কার্যকলাপের এই নয় মডেলটি তৈরি করেছে চিনের ওশান ইউনিভার্সিটির জিওফিজিসিস্ট লিন লিউ-এর নেতৃত্বাধীন এক গবেষণা দল। দক্ষিণ তিব্বতের ৯৪টি ব্রডব্যান্ড সিসমিক স্টেশন থেকে ‘আপ-অ্যান্ড-ডাউন’ এস-ওয়েভ এবং শিয়ার-ওয়েভ সংক্রান্ত তথ্যকে পি-ওয়েভ তথ্যের সঙ্গে একত্রিত করে ভূগর্ভস্থ প্লেটগুলির গতির ছবি তৈরি করেছেন তাঁরা। যে অঞ্চলে দুটি প্লেটে সংঘর্ষ হয়, সেই অঞ্চলে ভূমিকম্পের তরঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। এই তরঙ্গগুলি ব্যবহার করে, তারা ভারতীয় প্লেটের বর্তমান চিত্র তৈরি করা হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় প্লেটের নীচের অংশটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার গভীর। অথচ উপরের দিকে কোথাও কোথাও প্লেটটির গভীরতা মাত্র ১০০ কিলোমিটার। এর থেকেই গবেষকরা মনে করছেন, ভারতীয় প্লেটের উপরের দিকের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। ২০২২ সালে, গবেষকরা দুটি প্লেটের সীমানা খুঁজে বের করতে, তিব্বত অঞ্চলের উষ্ণ প্রস্রবনগুলির কোনটি থেকে কত পরিমাণ হিলিয়াম বুদবুদ তৈরি হচ্ছে, তার এক মানচিত্র তৈরি করেন। এই গবেষণা এবং এর আগের ভূ-রাসায়নিক গবেষণাগুলি থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, ভারতীয় প্লেটটি ভেঙে যাচ্ছে।

এই প্লেটের ভাঙন এবং বিকৃতির জন্য ভূপৃষ্ঠে কতটা চাপ তৈরি হতে পারে, সেই সম্পর্কে কিছুই বলেননি গবেষকরা। তবে, তাঁরা জানিয়েছেন, ভারতীয় প্লেট এবং ইউরেশিয় প্লেটের সীমানা অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কতটা বাড়ছে, সেই সম্পর্কে জানতে সহায়ক হবে তাঁদের গবেষণা।