জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল বাগজোলা খালে তরল ও কঠিন বর্জ্য সরাসরি ফেলা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু, এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পরিবেশ আদালতের সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এখনও বাগজোলা খালের জলে সরাসরি মিশছে কঠিন এবং তরল বর্জ্য। শুধু তাই নয় খালের দুই পাড়ে জবরদখলকারীদের সরানো যায়নি। এই অবস্থায় কেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? তা জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চাইল জাতীয় পরিবেশ আদালত।
আরও পড়ুন: দিঘায় ঝাউবন ধ্বংস করে গজিয়ে উঠছে বেআইনি নির্মাণ, কমিটি গঠনের নির্দেশ আদালতের
বাগজোলা খালে দূষণ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এরপর এই সমস্ত নির্দেশিকা দিয়েছিল। সেই নির্দেশ কার্যকর না করায় খালের উন্নতি তো দূরের কথা উলটে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এর ফলে আরও বেশি করে বিষাক্ত জল মিশছে খালের জলে। এই অবস্থায় খালের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় পরিবেশ আদালতে নতুন করে মামলা করেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। পরিবেশ আদালতে সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়েছে। তাতে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। তরল ও কঠিন বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দূষণ কেন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি? দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, একাধিক এলাকার নিকাশির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল এই বাগজোলা খাল। কলকাতা পূর্ব এলাকা, বিধান নগর, উত্তর ও দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি, পানিহাটি, বরাহনগর পু, হিডকোর মতো এলাকার নিকাশির মাধ্যম হিসেবে এই বাগজোলা খানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই সমস্ত এলাকার বর্জ্য বহন করে বাগজোলা খাল। কিন্তু, খালের দুপাশে কঠিন বর্জ্য এবং বাতিল নির্মাণ সামগ্রী রাখার ফলে সেগুলি জলে মিশছে বলে অভিযোগ। এর ফলে খালের জলে দূষণ বাড়ছে। তাছাড়া কারখানা থেকে নির্গত তরল বর্জ্য সরাসরি মিশছে বলে অভিযোগ।
২০১৭ সালে বাগজোলা খাল নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে এনজিটি। সেই মামলায় আদালত বান্ধব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি আদালতকে রিপোর্ট দেওয়ার পর মুখ্য সচিবের কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় পরিবেশ আদালত। তার ভিত্তিতে ২০২২ সালে ডিসেম্বরে এই মামলার নিষ্পত্তি করে জাতীয় পরিবেশ আদালত। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের বিভিন্ন দফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। তাছাড়া খাল ড্রেজিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পরিবেশ আদালত এতগুলি নির্দেশ দিলেও শুধুমাত্র খাল ড্রেজিং ছাড়া অন্য কোনও নির্দেশ পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর গত ১০ জানুয়ারি কেষ্টপুর খাল পরিদর্শন করেন সুভাষ দত্ত। তার পর তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।