জাতি শংসাপত্র দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, কাল রায়

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির মধ্যে দ্বৈরথ দেখেছিলেন আইনজীবীরা। দুই বিচারপতির নাম অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌমেন সেন। একজন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি। আর একজন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি। এবার এই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল। সিঙ্গল বেঞ্চ জাতি শংসাপত্রের দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তির জন্য এই ভুয়ো জাতি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে গত বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি রাজ্য পুলিশকে সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করতে বলা হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বিষয়টি উত্থাপন করেন বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে একই দিনে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ স্থগিত হয়ে যায়। এতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তখন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে নির্দেশ দেন, এই মামলার সমস্ত নথি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে। আর ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

অন্যদিকে ডিভিশন বেঞ্চ পুরো বিষয়টি জানতে পেরে জানিয়ে দেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বিতর্কিত। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অগ্রাহ্য করা যায় না। এমনকী সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এই বিষয়টি দেখে আরও তেতে ওঠেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ডিভিশন বেঞ্চের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই বিচারপতি সৌমেন সেন রাজ্যের রাজনৈতিক দলের মতো কাজ করছেন। এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে।

আরও পড়ুন:‌ মাঘের শীতেও ‘‌হিস হিস’‌ শব্দ, চারটি বিশাল গোখরো জারবন্দি হয়েছে কালনায়

এছাড়া এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি এই বিষয়টি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে স্থগিত করেন। এখানে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিআর গাভাই, সূর্য কান্ত এবং অনিরুদ্ধ বোস এই স্থগিতাদেশ দেন। এইবার এই বিতর্কিত নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে নিরপেক্ষ বিশ্বাস আছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাতে চিড় ধরতে পারে। এই কথা বলেই আবেদন করা হয়েছে। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলার রায় আগামীকাল সোমবার ঘোষণা করতে পারেন।