Suvendu slams Firhad: ‘তিনি নিজে কী ছিলেন?’ বিজেপির ‘সুরে’ কথা বলেও শুভেন্দুর তোপের মুখে ফিরহাদ

সন্দেশখালি কাণ্ডের কয়েক সপ্তাহ পার হলেও তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের কোনও খোঁজ মেলেনি। এরই মাঝে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শাহজাহান। তারপর নতুন করে তাঁকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এরই মাঝে শনিবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। অকপটে বলেন, ‘শাহজাহান যা করেছে, তা অন্যায়।’ ফিরহাদের এহেন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পালটা তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী। উল্লেখ্য, শাহজাহান নিয়ে আপাতত মুখে কুলুপ এঁটেছে রাজ্যের শাসকদল। সেখানে ফিরহাদের মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এই সব কথার কোনও মূল্য নেই। যিনি এই কথা বলছেন, তিনি নিজেই একজন অপরাধী। তিনি মন্ত্রী, মেয়র হওয়ার আগে নিজে কী ছিলেন?’

প্রসঙ্গত, শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা এবং ইডি কর্তাদের ওপর হামলার তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়েছে ইতিমধ্যেই। এর মাঝে সম্প্রতি আবারও শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। তবে এই অভিযানে কোনও কিছুই তদন্তকারীদের হাতে আসেনি। এই আবহে দলের দাপুটে নেতাকে নিয়েই ফিরহাদের বক্তব্য, ‘শাহজাহান যা করেছে সেটা অন্যায় করেছে।’ এই প্রথম রাজ্যের কোনও বড় মাপের মন্ত্রী প্রকাশ্য মন্তব্য করেলন শাহজাহানকে নিয়ে। রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রীর কথায়, ‘আমি গণমাধ্যমে দেখেছি। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিসারদের। যেটা করেছে নিশ্চিত করে বলছি অন্যায় করেছে।’

এর আগে গত গত ৫ জানুয়ারি কী ঘটেছিল? সেদিন সকালে ইডির আধিকারিকরা যখন শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছন, তখন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। শেখ শাহজাহানের দেখা মেলেনি। ইডির অফিসাররা ও সিআরপিএফ-এর জওয়ানরা বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দরজা খুলতে বলেছিলেন। কিন্তু এসবের মধ্যেই মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে এক দল উন্মত্ত জনতা লাঠি নিয়ে এসে ইডি আধিকারিকদের ঘিরে ফেলেন। ইডির দাবি, প্রায় ৮০০-১০০০ জনের উন্মত্ত জনতা চড়াও হয়েছিল তদন্তকারী দলের উপর। আক্রান্ত হয়েছেন ইডির অফিসাররা। ইডির তিন জন অফিসার হাসপাতালে ভরতি। এদিকে হামলার দায় পালটা ইডির উপরেই চাপিয়েছে বাংলার শাসক শিবির। তৃণমূলের মুখপাত্র থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রীদের দাবি, অভিযানের ব্যাপারে ইডি আগাম কোনও তথ্য দেয়নি। তথ্য দিলে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা থাকত। আর তাতে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না।

এদিকে সেই ঘটনায় ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করে ন্যাজাট থানার পুলিশ। শাহজাহানের বাড়ির কেয়ারটেকারের অভিযোগের ভিত্তিতেই সেই অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। অভিযোগ ছিল, ওয়ারেন্ট ছাড়াই শেখ শাহজাহানের বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন ইডি আধিকারিকরা। পরে সেই এফআইআর-এর ওপরে স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। এদিকে ইডির অভিযোগের প্রেক্ষিতেও পৃথক এফআইআর হয়েছে। শাহজাহান ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে সেই এফআইআর। রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার ও বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি জোবি থমাসের কাছে ইমেলের মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছে ইডি। সেই অভিযোগে ইডি অবশ্য উল্লেখ করে, কোর্ট ওয়ারেন্ট নিয়েই শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন আধিকারিকরা। সেই ঘটনায় এখনও অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। তবে শাহজাহান নিজে অধরা। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আরও একটি মামলা রুজু করেছে ন্যাজাট থানার পুলিশ। সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে সেই মামলা রুজু করা হয়েছে।