বিগত দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক অন্তর্দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠী কোন্দল, বিদ্রোহ সামনে এসেছে। বিভিন্ন কারণে এই বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। কোথায় জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বিধায়কের মন কষাকষি, কোথাও আদি-নব্য লড়াই তো আবার কোথাও প্রবীণ বনাম নবীন বিতর্ক। এই সব বিদ্রোহীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী। বিগত দিনে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল ইসলামপুরের বিধায়কের। তবে রায়গঞ্জের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ‘অভিমান’ মিটিয়ে বর্ষীয়ান নেতাকে কাছে নিয়ে এলেন মঞ্চে। প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে নিজের কাছে বসালেন মমতা। আর তাতেই মনে করা হচ্ছে, হয়ত করিম ও দলের মধ্যে যে বরফ জমেছিল, তা কিছুটা গলছে। (আরও পড়ুন: শাহজাহানকে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’র সঙ্গে তুলনা শোভদেবের, ‘ভদ্রলোক’ আখ্যা পার্থর)
আরও পড়ুন: উঠছিল বাধা দেওয়ার অভিযোগ, আর এবার বাংলার মাটিতে ভাঙল রাহুল গান্ধীর গাড়ির কাচ
সাম্প্রতিককালে করিমের দলবদল নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে এরই মাঝে উত্তরবঙ্গে রায়গঞ্জের জনসভায় মমতার ঠিক পাশের আসনে জায়গা হয় আবদুল করিমের। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী নিজের ভাষণের শুরুতে আবদুল করিমকে ‘সিনিয়র লিডার’ বলে আখ্যা দেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে যাতে ভোট ভাগাভাগি না হয় এবং বিজেপি যাতে এর ফায়দা না তুলতে পারে, তার জন্য দলীয় কোন্দল মেটাতে চাইছে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, এর আগে তৃণমূল বিধায়ক দলেরই ব্লক সভাপতিকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হয়েছিল। প্রসঙ্গত, যে ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে করিমের নিশানা তাঁর নাম জাকির হোসেন। তিনি জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের অনুগামী বলে পরিচিত। এদিকে এদিন মঞ্চে করিমের পাশেই ছিলেন কানহাইয়ালালও। তবে এই সবের মাঝেই জাকিরকে নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা গতকাল ফের একবার মমতাকে জানান করিম। এদিকে করিম দাবি করেন, জাকিরের বিষয়টা মমতা খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে মমতা প্রসঙ্গে গতকাল আবদুল করিম চৌধুরী জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘পাঁচবছর পর এখানে মমতা এসেছেন। দেখা করতাম এটাই ঠিক করাই ছিল। মমতা বলেছেন বরাবর আপনার খবর রেখেছি। তিনি আমার নেত্রী। একটা ঘরের মধ্যেও ছেলের এরকম ক্ষোভ অভিমান হয়। দিদি বলেছিল আমি খুব ব্যস্ত থাকি। কিন্তু আজ সেই আগের মমতাকে ফিরে পেলাম। এতে আমি খুব খুশি। মমতা নিজে আমাকে ফোন করেছিলেন রায়গঞ্জে এই মিটিংয়ে আসার জন্য।’ পাশাপাশি করিম গতকাল জানিয়ে দেন, তিনি তৃণমূল ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না। এদিকে তাঁর প্রতি মমতার মনোভাব প্রসঙ্গে করিমের বক্তব্য, ‘১১ বার নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছি। তাই মমতা আমাকে সম্মান করেন।’