Maldives prosecutor general stabbed: ছুরিকাঘাত মলদ্বীপের প্রসিকিউটার জেনারেলকে, আগের ভারতপন্থী সরকার নিয়োগ করেছিল তাঁকে

নৃশংস ভাবে ছুরিকাঘাত করা হল মলদ্বীপের প্রসিকিউটার জেনারেল হুসেন শামিমকে। এর আগের ইব্রাহিম সোলিহ-র প্রশাসন শামিমকে এই পদে নিযুক্ত করেছিল। উল্লেখ্য, সোলিহ প্রশাসন ভারতপন্থী ছিল। তবে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। মলদ্বীপের মসনদে বসেন মহম্মদ মুইজ্জু। এই মুইজ্জু আবার চিনপন্থী। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এদিকে সম্প্রতি মুইজ্জুকে গদিচ্যুত করার জন্য মলদ্বীপের সংসদে প্রস্তাব আনার বিষয়ে পরিকল্পনা করে ভারতপন্থী ‘মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পর্টি’। কয়েকদিন আগে আবার মলদ্বীপের রাজধানী মালের মেয়র নির্বাচনেও হার হয় মুইজ্জর ‘পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর। এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে মলদ্বীপের প্রসিকিউটার জেনারেলের ওপর এই নৃশংস হামলা নয়া মাত্রা যোগ করবে সেদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। (আরও পড়ুন: ভারতের পড়শি দেশে চিনা প্রভাব বিস্তার কি দিল্লির কূটনৈতিক ব্যর্থতা? অকপট জয়শংকর)

রিপোর্ট অনুযায়ী, শামিমকে মালে শহরেই ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়, তা তীক্ষ্ণ ছিল না। তবে একাধিকবার তা দিয়ে আঘাত করা হয় শামিমকে। পুলিশ এই হামলার তদন্তে নেমেছে। উল্লেখ্য, বিগত দিনে মালের রাস্তায় একাধিক রাজনীতিবিদের ওপর হামলার খবর সামনে এসেছে। এদিকে জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই মুইজ্জুকে পদচ্যুত করতে মলদ্বীপের সংসদে প্রস্তাব পেশ হতে পারে। সেদেশে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করার প্রস্তাব পেশ করতে যত সই প্রয়োজন, তা নাকি জোগাড় করে ফেলেছে মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বা এমডিপি। প্রসঙ্গত, বর্তমানে মলদ্বীপ সংসদে বিরোধী এমডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ। কয়েকদিন আগেই মলদ্বীপের সংসদে এমডিপি এবং শাসক পিএনসি-র সাংসদদের হাতাহাতির ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই সব ঘটনার মাঝে আজকের এই হত্যাকাণ্ড সেই দেশকে নাড়িয়ে রেখে দিয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে মলদ্বীপের। একদা বন্ধু মলদ্বীপ এখন ভারতের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে। উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মেডিক্যাল ইমারজেন্সির ক্ষেত্রে মলদ্বীপকে সাহায্য করতে ভারতের তরফ থেকে সেই দেশকে দু’টি হেলিকপ্টার এবং একটি বিমান দেওয়া হয়েছে। তবে সেই বিমান ও হেলিকপ্টার পরিচালনার জন্যে সেদেশে ভারতের প্রায় ৮০ জন সামরিক সদস্য আছেন। ভারতের এই সামরিক কর্মীদের মলদ্বীর ছাড়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে বসে আছেন মুইজ্জু। এরই মধ্যে ভারতের দেওয়া বিমান ব্যবহার করতে অস্বীকার করায় সম্প্রতি সে দেশে এক শিশুর মৃত্যু হয়। যা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছিল। প্রবল চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল মুইজ্জু সরকারকে। এদিকে চিন ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মুইজ্জু নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই দাবি জানিয়ে এসেছেন, ভারতীয় সেনাদের মলদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনে জিতে যাওয়ার পরও তিনি সেই দাবি তুলে ধরেছিলেন। আর সম্প্রতি চিন সফর থেকে নিজের দেশে ফিরেই ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন সেদেশের তিন মন্ত্রী। এই আবহে তিনজনকেই পদ খোয়াতে হয়েছে। তবে এই ঘটনার জেরে মলদ্বীপকে বয়কটের ডাক ওঠে ভারতে। এই সবের মাঝেই আবার রিপোর্টে দাবি করা হয়, ভারত সফরে আসতে চেয়েছিলেন মুইজ্জু। তবে দিল্লি তাতে আগ্রহ দেখায়নি। এই কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মুইজ্জুর গদি বেশ টালমাটাল।