Budget Allocation for NPR: CAA নিয়ে উঠছে রব, এই আবহে চব্বিশেই কি হবে NPR? বাজেটেই মিলল বড় ইঙ্গিত

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে ক্রমেই গুঞ্জন বাড়ছে। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপির নেতারা বিগত কয়েকদিন ধরেই দাবি করছেন, শীঘ্রই গোটা দেশে সিএএ কার্যকর করা হবে। এই আবহে জনগণনা এবং এনপিআর নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। কারণ এর আগে সিএএ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সংসদে দাঁড়িয়েই অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, সিএএ-র পরে দেশে এনপিআর এবং এনআরসি হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, এনআরসি-র প্রথম ধাপ হল এই এনপিআর। আর এই সব জটিলতা এবং কোভিডের কারণে দেশে সময় মতো জনগণনা হয়নি। এনপিআর-ও হয়নি। তবে এবছর কি এনপিআর হবে? এই প্রশ্নের বড় একটা ইঙ্গিত মিলেছে বাজেট বরাদ্দের তথ্য থেকে। (আরও পড়ুন: USA থেকে ৪ বিলিয়ন ডলারের ৩১টি ঘাতক ড্রোন আসবে ভারতে, শিলমোহর মার্কিন কংগ্রেসের)

আরও পড়ুন: বিতর্কের মাঝে মলদ্বীপের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ল ৫০ শতাংশ! খরচের অঙ্ক জানেন কত?

রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বছরে জনগণনা এবং এনপিআর খাতে বরাদ্দ অনেকটাই কমানো হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে যেখানে জনগণনা এবং এনপিআর খাতে ৩৭৬৮ বরাদ্দ করা হয়েছিল, সেখানেই এবারে সেই বরাদ্দ কমিয়ে মাত্র ১২৭৭.৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। আর এই বরাদ্দ কমানোর ফলেই মনে করা হচ্ছে, হয়ত এই বছরও জনগণনা এবং এনপিআর হবে না দেশে। এর আগে গত ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ক্যাবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ২০২১ সালের জনগণনার জন্য ৮৭৫৪.২৩ কোটি টাকা খরচ হবে। এবং এনপিআর আপডেট করার জন্য ৩৯৪১.৩৫ কোটি টাকা খরচ করা হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, জনগণনা এবং এনপিআর-এর গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ১২ হাজার কোটি খরচ হতে পারে। এই আবহে এবছরের বাজেটের গোটা বরাদ্দই করা হয়েছে জনগণনা এবং এনপিআর-এর সমীক্ষা খাতে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধিত বিল পাশ হয়েছিল সংসদে। এরপর তা আইনে পরিণত হয়। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সিএএ-র বিরোধিতার জেরে তখন তা কার্যকর করা হয়নি। এমনকী বিগত পাঁচবছরে সিএএ-র নিয়মও তৈরি করে উঠতে পারেনি সরকার। প্রতি ৬ মাস পরপর সংসদে এই আইন কার্যকর করার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে সরকার। আর সিএএ নিয়ে জল্পনার মাঝেই এনপিআর নিয়েও জল্পনা আছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এনপিআর আপডেট করার কথা ছিল। তবে কোভিডের জন্য তা করা সম্ভব হয়নি। এদিকে জনগণনারও কোনও দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। আর বাজেট বরাদ্দের দিকে নজর দিয়ে মনে করা হচ্ছে, এবছরও হয়ত জনগণনা হবে না দেশে।

এদিকে গত ২৯ জানুয়ারি এক জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর দাবি করেছিলেন, ১ সপ্তাহের মধ্যেই বাংলা সহ দেশের সর্বত্র কার্যকর করা হবে সিএএ। এরপর থেকে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরাও বারবার সিএএ নিয়ে দাবি করে আসছেন। উল্লেখ্য, এই আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ সহ ৬টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে গতবছর কলকাতায় এসেও সিএএ নিয়ে বড় দাবি করে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিশ্লেষকদের মত, গত লোকসভা ভোটে মতুয়া ভোটের জোরে বাংলায় ভালো ফল করতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। সেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অক্ষত রাখতে সিএএ অস্ত্রে শান দিচ্ছে বিজেপি। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ২০১৯ সালে আইনে পরিণত হলেও তা এখনও দেশে কার্যকর হয়নি। এই আইনের নিয়ম তৈরি হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করে বলেনি সরকার। এরই মাঝে সিএএ নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। আবার সিএএ বিরোধিতায় সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই সবের মাঝে এনআরসি এবং এনপিআর নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সংশয় রয়েছে।