Uniform Civil Code’s final draft report: লিভ-ইন করলে পুলিশকে বলতে হবে, সম্পত্তির সমান ভাগ- অভিন্ন বিধিতে কী সুপারিশ আছে?

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়ল উত্তরাখণ্ডে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে যে কমিটি গঠন করেছিল উত্তরাখণ্ড সরকার, সেই কমিটি মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। শনিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই কমিটির সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তারপর রাজ্য বিধানসভায় পেশ করা হবে সেই রিপোর্ট। যে কারণে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। আর যদি সেটা পাস হয়ে যায়, তাহলে স্বাধীনতার পরে প্রথম রাজ্য হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হবে উত্তরাখণ্ডে। ওই চূড়ান্ত রিপোর্টে কী আছে, তা সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর, প্রত্যাশামতোই ওই রিপোর্টে বহুবিবাহের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ৭৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে আরও একাধিক সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে কী কী সুপারিশ করেছে কমিটি?

১) সুপারিশ অনুযায়ী, সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হবে বহুবিবাহ। মহিলাদের একাধিক স্বামী থাকার বিষয়টিও বেআইনি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করার সুপারিশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কমিটির সুপারিশে জানানো হয়েছে যে সেই বিষয়টি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হোক। মুসলিম ব্যক্তিগত আইনে থাকা ‘হালালা’ এবং ‘ইদ্দত’-র উপরও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা চাপাতে হবে। শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে বলে সুপারিশ করা হয়েছে।

২) ওই সুপারিশ অনুযায়ী, যাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে আছে, তাঁদের পুলিশের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। নিজেদের বর্তমান স্টেটাসের বিষয়ে ‘ঘোষণাপত্র’ প্রদান করতে হবে যুগলদের। 

৩) ধর্ম নির্বিশেষে মেয়েদের ন্যূনতম বিয়ের বয়স ১৮ নির্ধারণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ অনুযায়ী, ছেলেদের ক্ষেত্রে সেটা ২১ বছর করা হোক। 

৪) বাধ্যতামূলকভাবে সব বিয়ে নথিভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ রেজিস্ট্রি ম্যারেজ বাধ্যতামূলক করা হবে। ধর্ম নির্বিশেষে সেটা কার্যকর করার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।

৫) সুপারিশ অনুযায়ী, ডিভোর্সের ক্ষেত্রে সব ধর্মের দম্পতির ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ড সমান করা হবে। আপাতত হিন্দু দম্পতিদের ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ডের মেয়াদ হল ছয় মাস। মুসলিমদের ক্ষেত্রে সেরকম কোনও ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ড নেই। আর খ্রিস্টানদের হল দু’বছর।

৬) দম্পতির মধ্যে সংঘাত চললেও দাদু-ঠাকুমার কাছে সন্তানের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: UCC Assam Model: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অসমে প্রয়োগ করা যায় কি না দেখতে হবে, মতামত হিমন্তের, বন্ধ হতে পারে বহুবিবাহ

৭) সন্তান দত্তকের নিয়ম সহজ করে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে। ওই সুপারিশ অনুযায়ী, মুসলিম মহিলারাও সন্তান দত্তক নিতে পারবেন।

৮) উত্তরাখণ্ড সরকারের গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, পৈতৃক সম্পত্তির ক্ষেত্রে পুরুষ এবং মহিলাদের সমান অধিকার থাকবে। অর্থাৎ উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে কেউ বাড়তি সুবিধা পাবেন না।

৯) কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, যে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যু হবে এবং সেই পরিবারে কোনও অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান থাকলে বিশেষ তহবিল তৈরি করা হবে। যদি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী অসুস্থতার জন্য শয্যাশায়ী থাকেন, তাহলেও সেই তহবিল তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে।

১০) তফসিলি জনজাতিভুক্ত শ্রেণির মানুষদের সেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতার বাইরে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: Mamata on UCC: ওদের নিয়মে বিয়ে কেন করবেন-অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আদিবাসীদের প্রশ্ন মমতার