অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষ, বাংলার বাজারে রসুনের দর ৫০০ ছুঁয়েছে

শীতের শেষবেলায় শহর থেকে শহরতলি, সর্বত্রই আকাশ ছুঁল রসুনের দাম। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই জেলায় জেলায় খুচরো বাজারে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে রসুন। কেবল খুচরো বাজার নয়, পাইকারি বাজারেও উর্ধ্বমুখী রসুনের দাম। ৪০০-৪৫০ টাকা দরে রসুন কিনতে হচ্ছে খুচরো বিক্রেতাদের। কিন্তু কেন এমন দাম বৃদ্ধি? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট সময়ে চাষ না-হওয়ার কারণেই এই হঠাৎ দামবৃদ্ধি। সাধারণত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেলে দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্ত রসুনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আপাতত নির্লিপ্ত রয়েছেন সকলেই। তবে দাম বৃদ্ধির ফলে আমিষাশী ভোজনবিলাসীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিয়েবাড়ির মরশুমে কিছুটা খরচ বাড়ছে পাত্র কিংবা পাত্রীপক্ষের।

রসুনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিএসপি স্বপন কুমার চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, এই বছর রসুন চাষের সময় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় সঠিক ভাবে চাষ করা যায়নি। ফলনেও ঘাটতি দেখা যায়, আর একারণেই বাজারে রসুনের জোগানে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। শীতের এই মরশুমে পিকনিক, বিয়ের প্রচুর অনুষ্ঠান থাকায় রসুনের চাহিদা থাকাও দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বাংলায় রসুন চাষ হয় খুবই সামান্য, অন্য রাজ্যের উপর নির্ভর করে থাকতে হয় বাংলার রসুন বিক্রেতাদের। পশ্চিমবঙ্গে রসুনের দাম বৃদ্ধির পেছনে এটিও একটি কারণ। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রে দেশের বেশির ভাগ রসুন চাষ হয়। পাশাপাশি ছত্তিশগঢ়, তামিলনাডু, কর্ণাটক, রাজস্থানেও কমবেশি রসুনের ফলন হয়। মূলত পশ্চিম ভারত থেকে পূর্ব ভারতে আমদানি হয় হবে রসুনের দাম তুলনামূলক বেশি হয় বাংলা, বিহারের মত রাজ্যগুলিতে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আবহাওয়ার খামিখেয়ালি আচরণের সঙ্গে সঙ্গে মরশুমের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মিডলম্যানদের স্টোর করার প্রবণতার কারণেও জোগান কমেছে রসুনের। আর চাহিদা উর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাজারমূল্যও আকাশ ছুঁয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ অথবা মার্চের গোড়ার নতুন রসুনের জোগান বেড়ে দাম কিছুটা স্বাভাবিক হবে বলেই মনে করছেন বিক্রেতারা।