বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। চাকরি প্রার্থীদের কাছে তিনি ভগবান। আবার শাসকদলের একাংশের কাছে তিনি ভিলেন। তবুও নিজের অবস্থান থেকে কোনও অংশেই সরে আসেন না বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তবে কয়েকদিন আগে সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছিল। এবার খোদ বিচারপতি এনিয়ে এজির কাছে ক্ষমা চাইলেন। প্রয়োজনে তিনি যে তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসতেও পিছুপা হন না সেটাই যেন জানিয়ে দিলেন তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে আমি আপনাকে অনেক কিছু বলেছি। আমি অনেক বছর ধরে চিনি। প্রায় ৩৭ বছর। আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আই অ্যাম ভেরি সরি।
তবে বিচারপতির এই বক্তব্য শুনে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, আমিও ওই দিন অনেক কিছু বলেছিলাম। কার্যত মধুর ভাবেই মিটল তাঁদের দ্বন্দ্ব। আদালতে যে দ্বন্দ্বের সূচনা সেই দ্বন্দ্ব মেটাতে হস্তক্ষেপ করলেন খোদ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়।
সূত্রের খবর,মঙ্গলবার এজলাসে ডেকে রাজ্য়ের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় জানান, বন্ধু ক্ষমা করে দিও। এমনকী তিনি যে রাগের মাথাতেই আগের কথাগুলি বলে দিয়েছিলেন সেকথাও জানান বিচারপতি। তবে এজিও বিচারপতিকে জানিয়ে দেন, সেদিন যেসব কথা বলেছিলাম সেগুলি বলাও উচিত হয়নি।
কিন্তু ঠিক আগের ঘটনাটা কী হয়েছিল?
মেডিক্য়াল কলেজে ভর্তি মামলা নিয়েই দুপক্ষের মধ্য়ে দ্বন্দ্ব ক্রমশ চড়তে থাকে। এজিও বিচারপতিকে কিছু কথা বলেছিলেন। তবে এবার খোদ বিচারপতি এই দ্বন্দ্বকে কমানোর ব্যাপারে সব চেষ্টা করলেন।
এদিকে এই দ্বন্দ্ব পরিস্থিতির পরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে চিঠি দিয়েছিলেন ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের একাংশ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় যা বলেছিলেন তা আদালত অবমাননার সামিল বলে উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি। তবে মঙ্গলবার নিজেই পুরনো বন্ধু কিশোরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন বিচারপতি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন না কিশোর আমার কত উপকার করেছে। এমনও হয়েছে কিশোর, ও আমার আর এক বন্ধু না থাকলে আমি মরেই যেতাম। আগের মন্তব্যের জন্য এজির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় এজিকে বলেন, সেদিন আমি রাগের মাথায় অনেক কিছু বলেছি। বারের আইনজীবীদের সকলের তা জানা উচিত। আমি আমার বন্ধুর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। বিচারপতি বলেন, আপনার উদ্দেশে কিছু বলার মানসিকতা আমার ছিল না রাগের মাথায় বলেছিলাম।