চা শ্রমিকদের দুর্দশার দিন যেন কিছুতেই ফুরোচ্ছে না। মূলত যে ছোট চা বাগান রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সেখানকার চা শ্রমিকদের মুখে হাসি নেই। এই ক্ষুদ্র চা বাগানের সঙ্গে হাজার হাজার চা শ্রমিক যুক্ত রয়েছেন। কিন্তু মূল সমস্য়া যেটা হয়েছে, চায়ের উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে সাময়িকভাবে। কিন্তু চা পাতার গুণগত মান বাড়েনি। মানে এই চা পাতার বিশেষ কদর নেই চা প্রেমীদের কাছে।
কিন্তু ছোট বাগানের কথা কেন বলা হচ্ছে? আসলে ডিসেম্বরে কেবলমাত্র ক্ষুদ্র চা বাগানে চায়ের উৎপাদন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ হিসাবে যেটা বলা হচ্ছে যে ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই বড় ও মাঝারি বাগানে চা গাছ ছেঁটে ফেলার কাজ শুরু হয়ে যায়। আর ক্ষুদ্র বা বাগানগুলিতে তখনও উৎপাদন হচ্ছিল। এদিকে আবহওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরে সেই ক্ষুদ্র চা বাগানগুলিতে চায়ের উৎপাদন আচমকাই বেড়ে যায়। কিন্তু চায়ের উৎপাদন আচমকা বেড়ে গেলেও চা পাতার গুণগত মান বেড়়েছে এমনটা নয়।
হিসেব বলছে, ছোট চা বাগানগুলিতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মানে মরসুমের একেবারে শেষ দিকে তিন কোটি কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। ২০২২ সালের তুলনায় সেই উৎপাদন প্রায় ১ কোটি কেজি বেশি হয়েছে। অর্থার ২০২২ সালে এই উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি কেজি। সেক্ষেত্রে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চা চাষিদের মুখে হাসি থাকার কথা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্য়াসোসিয়েশন গোটা পরিস্থিতিটি খতিয়ে দেখছে। চা পাতার দাম না মেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা।
কারণ উৎপাদন বাড়লেও চা চা পাতার গুণগত মান সেভাবে না হওয়ার জেরে দাম মিলছে না। তার জেরেই উৎপাদন বাড়লেও চা পাতার দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
হাজার হাজার চা শ্রমিক এই চা পাতার দামের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কারণ চা পাতার দাম মিললে খুশি থাকবেন মালিকপক্ষ। তার জেরে চা শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা গন্ডা, মজুরিও ঠিকঠাক করে মিলবে। দুটি পাতা একটা কুঁড়ির উপরেই তো তাঁদের জীবন নির্ভরশীল। কিন্তু এবার উৎপাদন বেশি হলেও দাম উঠল না চা পাতার।