চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নওয়াজ শরীফ

চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন দেশটির তিনবারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এমনটাই ধারণা করছে বিবিসি, গার্ডিয়ান এবং এএফপিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য নিউজ।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়া নওয়াজ শরীফ গত বছর স্ব-আরোপিত নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালে যে অভিযোগগুলোর কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন এবার সেগুলো থেকে নিজেকে দায়মুক্ত করার সুযোগ পাবেন তিনি।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) যদি ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী না হয়, তাহলে বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো হবে।’

এদিকে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “গত সপ্তাহে করাচিতে পাকিস্তানের বড় বড় ব্যবসায়ীদের এক সমাবেশে সাক্ষাত্কার নেওয়া অনেকেই বলেছেন, তারা আগামীতে একটি ঝুলন্ত সংসদ এবং একটি দুর্বল জোট সরকার দেখছেন। বেশিরভাগই আশা করেন, এর নেতৃত্ব দেবেন নওয়াজ শরীফ বা তার ভাই শেহবাজ শরীফ, যিনিও একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।”

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের এক পররাষ্ট্রনীতি ফেলো মাদিহা আফজালের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লুমবার্গ বলছে, “নওয়াজ যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। একটি হচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং অন্যটি একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সাথে তার সম্পর্ক ঠিক করা।”

সিএনএন বলছে,  “প্রচারণার ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ নওয়াজ শরীফ। ৭৪ বছর বয়সী নওয়াজ শরীফ স্ব-নির্বাসন থেকে ফিরে এসে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের আশায় চতুর্থ মেয়াদে নেতা হিসেবে ফিরতে চাইছেন। তবে প্রবীণ এই নেতা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী, নিহত প্রাক্তন নেতা বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির কাছে শক্তিশালী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন।

সাবেক সিনিয়র ব্রিটিশ কূটনীতিক এবং কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক টিম উইলাসি-উইলসি বলেছেন, “শরীফ অভিজ্ঞ। তিনি সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারদর্শী। তিনি ভারতের সাথে সুসম্পর্ক চাইবেন।

এপি রিপোর্ট করেছে, “গত অক্টোবরে দেশে ফেরার পর আদালত তার দোষী সাব্যস্ত এবং কারাদণ্ডের রায় বাতিল করার কারণে চতুর্থ মেয়াদে ফেরার পরিষ্কার পথ রয়েছে নওয়াজের। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খান কারাগারে থাকায়, ২০১৮ সালের নির্বাচন হারার ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মঞ্চ তৈরি হয়েছে। ইমরান খান তখনই প্রধানমন্ত্রী হন, যখন নওয়াজ আইনি জটিলতায় ছিলেন। এবার ইমরান খান কারাগারে থাকায় বিশ্লেষকরা নওয়াজের আরেকটি জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন।

মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট বলেছে, “ভবিষ্যদ্বাণী হলো, নওয়াজ শরীফ এবং তার পিএমএল-এন ক্ষমতায় জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) যদি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জয়ী হয়, তাহলে এটি হবে বিশাল আশ্চর্য এবং অলৌকিক ঘটনা।”

টেলিগ্রাফ লিখেছে, “প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে রাজ্যাভিষেকের আশা করছেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খান অপরাধমূলক শাস্তির আওতায় পড়ে জেলে আছেন।”



রার/সা.এ