চার বছর পর কলকাতায় ‘বেঙ্গল’, দলে নেই বাংলার একজনও! কিন্তু কেন?

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: কলকাতা ফের শুনবে কাবাডি…কাবাডি…কাবাডি! আগামী ৯-১৪ ফেব্রুয়ারি, রাতের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম মাতবে প্রো কাবাডি লিগে (Pro Kabaddi League, PKL)। পাক্কা চার বছর পর বাংলার ফ্র্য়াঞ্চাইজি বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স (Bengal Warriors) হোম লেগ খেলবে নিজেদের শহরে। ২০১৯ সালে শেষবার যখন বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স কলকাতায় খেলেছিল, সেবার তারাই হয়েছিল পিকেএল চ্য়াম্পিয়ন। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক কাবাডি লিগ বিগত নয় বছরে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে দেশের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের মনে। এবছর পিকেএল দেখছে দশম সংস্করণ। চার বছর পর ঘরের ম্য়াটে নামার আগে বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ দুপুরে, বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স সাংবাদিক বৈঠক করল নেতাজি ইন্ডোরে প্রেস কনফারেন্স রুমে। 

সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন টিমের সিইও অপূর্ব গুপ্তা। দলের মালিকানা এখন অপূর্বর কেপ্রি স্পোর্টসের হাতে। ছিলেন বাংলার কোচ কাশীনাথ ভাস্করণ, অধিনায়ক মনিন্দর সিং ও ডিফেন্ডার শুভম শিন্ডে। অতীতে বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সে বাঙালি কবাডি খেলোয়াড়রা খেলেছেন। কিন্তু এই মরসুমে বাংলার ফ্র্য়াঞ্চাইজিতে নেই রাজ্য়ের একজন খেলোয়াড়ও। কেন বাংলার খেলোয়াড়রা ব্রাত্য? শ্রীলঙ্কা ও তাইওয়ান থেকে খেলোয়াড় তুলে এনেছে বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স। কিন্তু কেন তারা বাংলার একজনকেও নিতে পারেননি দলে! বিস্ফোরক কথা বলে দিলেন কোচ কে ভাস্করণ। 

বেঙ্গলের কোচের থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, কেন বাংলার একজনকেও রাখা গেল না দলে! তার উত্তরে ভাস্করণ বলেন, ‘অতীতে আমাদের দলে বাংলার খেলোয়াড়রা খেলেছে। তবে এই মরসুমে একজনও বাংলার খেলোয়াড় নেই। আমরা ট্রায়ালে সেই মানের একজনও খুঁজে পাইনি, যাকে দলে নেওয়া যায়। আমি যখন কাবাডি খেলতাম তখন কিন্তু বাংলায় অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা ছিলেন। আনসার আলি, বিশ্বজিৎ পালিত, রমা সরকার ও পায়েল চৌধুরীর মতো সব নাম। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে ও পূর্ব রেলওয়ের দু’টি শাখা থেকে স্পোর্টস কোটায় অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় নিয়োগ করা হয়েছিল। রাজ্য় ভিত্তিক টুর্নামেন্ট থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক স্তরেও অনেক অনেক বেশি টুর্নামেন্ট হত। বিশেষত সাত দেশীয় টুর্নামেন্ট হত মেয়েদের নিয়ে। ছেলেদের জন্য়ও হত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। এখন তো সেটা পড়তির দিকে। কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের মধ্য়ে সেই ঐক্য় নেই। ঐক্যের অভাব আছে বলেই টুর্নামেন্ট কমে গিয়েছে। যদি তারা ঐক্য়বদ্ধ হতে পারে, তাহলে আগামী দিনে বাংলা থেকে অনেক খেলোয়াড় উঠে আসবে। শুধু বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সেই নয়, তারা সব জায়গাতেই খেলার সুযোগ পাবে বাংলার খেলোয়াড়রা। বিশেষত বাংলার কথা আমি বলব। এখানে কিন্তু যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে মাঠ আছে, ভালো অ্যাকাডেমি তৈরি করতে হবে। অনেক তরুণরা কাবাডি খেলতে চায়। কিন্তু তারা জানে না যে, কীভাবে খেলতে হবে। সেজন্য়ই তো কোচেরা রয়েছেন। ‘

১২ দলীয় পিকেএলে এই মুহূর্তে বেঙ্গল পয়েন্ট টেবলে ৯ নম্বরে। ১৭ ম্য়াচে ৪৪ পয়েন্ট তাদের ঝুলিতে। মগডালে জয়পুর পিংক প্য়ান্থার্স (১৯ ম্য়াচে ৭৭ পয়েন্ট)। দুয়ে পুনেরি পল্টন (১৮ ম্য়াচে ৭৬ পয়েন্ট)। এই দুই দল ইতিমধ্য়েই প্লে-অফে চলে গিয়েছে। আরও চারটি দলের কাছে সুযোগ রয়েছে প্লে অফে যাওয়ার। বেঙ্গলের কাছে প্রায় প্রতিটি ম্য়াচই এখন ডু-অর-ডাই। সোজা কথায় কলকাতায় চারটি ম্য়াচই তাদের জিততে হবে। তবেই খুলতে পারে প্লে অফের দরজা। অধিনায়ক মনিন্দর আশাবাদী। তিনি বলছেন, ‘দেখুন বাংলায় ফিরে দারুণ লাগছে। এখানকার সমর্থকরা আমাদের জন্য় ভীষণ লাকি। দেশের অন্য় প্রান্তে খেললে, আমাদের খেলায় ওঠাপড়া থাকে। কিন্তু বাংলায় আমরা সত্য়িই খুব ভালো খেলি। এখানে হারি না। এর কারণ আমি জানি না। আমাদের চারটি ম্য়াচই জিততে হবে। সেই চেষ্টাই করব।’ বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স টিম আশা করছে যে এবারও প্রচুর সমর্থকরা আসবেন ইন্ডোরে। পেটিএম ইনসাইডারে ২০০ টাকা থেকে টিকিটের দাম শুরু। সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা। বক্সঅফিস বা কাউন্টার সেলের ব্য়বস্থাও রয়েছে।