রসুনের দাম বাড়ল আকাশছোঁয়া, কলকাতার বাজারে ৬০০ ছুঁল রসুন, নাভিশ্বাস মধ্যবিত্তের

সম্প্রতি পিঁয়াজের দামের ঝাঁঝে চোখে জল নাকের জল এক হয়েছিল আমজনতার। দাম বৃদ্ধির জেরে টমেটো কিনতেও নাভিশ্বাস উঠেছিল। তবে এবার সবকিছুর সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে রসুনের দাম। মধ্যবিত্ত মানুষের রান্না ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে রসুন। আর সেটা কিনতেই পকেটে টান পড়ছে আম–আদমির। বাজার ঘুরে শোনা গেল, রসুন হাত দিতেও এবার লাগবে ছ্যাঁকা। ১ কেজি রসুনের দাম ৬০০ টাকা। শুনে পিলে চমকে উঠলেও এটাই সত্যি। গত ৪০–৪৫ বছরে এমন আকাশছোঁয়া দাম দেখেননি বিক্রেতারাও। শীত বিদায় নিতে চলেছে। সেখানে রসুনের দাম কেন ঊর্ধ্বমুখী?‌ উঠছে প্রশ্ন।

এদিকে শীতের শেষে রসুনের দাম অনেকটাই কমে যায়। কারণ এখন রসুন জমি থেকে উঠে। তাই একদিকে আমদানি বেশি হয় অপরদিকে দামও কম হয়। কিন্তু চলতি মরশুমে একেবারেই বিপরীত ঘটনা ঘটেছে। জমি থেকে রসুন ওঠার সময় কয়েকগুণ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে রসুনের। বাজারে গিয়ে মাথায় হাত দিচ্ছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, জোগান কম বলেই দাম বাড়ছে। রসুনই এখন তাই ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আক্ষেপের সঙ্গে জানান, রসুনের বিক্রি কমেছে স্বাভাবিকভাবেই। দাম এতটাই বেড়েছে যে পাইকারি বাজারে গিয়ে বেশি রসুন কেনা সম্ভব হচ্ছে না ব্যবসায়ীদের পক্ষে।

অন্যদিকে ইন্দোর ও শ্রীগড়ের রসুনেই ভরসা করতে হয় বাঙালিকে। সেখানে এবার ফলন কম হওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির জেরে ফলন কম হয়েছে। আপাতত বাজারে নতুন রসুন না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। মালদা নিয়ন্ত্রিত বাজারের ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক তরুণ ঘোষ বলেন, ‘‌চাহিদা মতো আমদানি হচ্ছে না রসুনের। তাই কয়েক গুণ দাম বেড়েছে। ভিন রাজ্যের রসুনের উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বাংলায় দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে স্থানীয় রসুন বাজারে আসলে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’‌

আরও পড়ুন:‌ আলু চাষে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেবে রাজ্য সরকার, বাজেটে সন্তোষ প্রকাশ চাষিদের

এছাড়া জেলার নানা এলাকায় কিছু রসুন চাষ হয়। সেগুলি খোলা বাজারে বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে রসুন থাকে। চলতি মরশুমে, ইন্দোর ও বিহারের শ্রীগড় এলাকায় রসুনের ফলন ব্যাপকভাবে মার খেয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রসুন উৎপাদন হয়নি। যার প্রভাব পড়েছে বাংলায়। চাহিদা মতো জোগান না মেলায় দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। প্রায় একমাস ধরে রসুনের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আর বেশি দিন নয়। আগামী দু’‌সপ্তাহের মধ্যেই রসুনের দাম স্বাভাবিক হবে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ ইতিমধ্যেই জেলায় ও রসুন জমি থেকে উঠতে শুরু করেছে। সেই রসুন বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আসলেই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।