রাজ্য বাজেটে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ, কেন্দ্রীয় পোর্টালে তথ্য নেই

বাংলায় প্রত্যেক বছর ডেঙ্গি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাতে মানুষ মারা পর্যন্ত যায়। এই উদ্বেগের কথা বৃহস্পতিবার ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের বাজেটে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ২০২৩ সালে বাংলায় কতজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গিয়েছেন সেটার কোনও পরিসংখ্যান কেন্দ্রের পোর্টালে নথিভুক্ত হয়নি। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ভেক্টর বোর্ন ডিজিস কন্ট্রোল’–এর পোর্টালে ২০২৩ সালে দেশের অন্যান্য রাজ্যের ডেঙ্গির পরিসংখ্যান আছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ঘর ফাঁকা। অর্থাৎ ডেঙ্গি উদ্বেগের কারণ হলেও পরিসংখ্যান অমিলই।

এদিকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাজ্যে দৈনিক কতজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তার জেরে মারা গিয়েছেন সেটার কোনও পরিসংখ্যান সরকারিভাবে দেয়নি রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ। বারবারই বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। সেখানে আজ কেন রাজ্য বাজেটে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে?‌ উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের একাংশ বলেছেন, ‘আগে অস্বীকার করলেও এখন রাজ্য সরকার নিজেই স্বীকার করল, ২০২৩ সালে ডেঙ্গি উদ্বেগের কারণ ছিল।’‌

অন্যদিকে ২০২৩ সালে রাজ্যে ব্যাপক হারে ডেঙ্গি দেখা দেয়। রোজই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ডেঙ্গির শিকার হন। যদিও বিষয়টি নিয়ে আগাগোড়াই চুপ করে ছিল স্বাস্থ্য দফতর। বেসরকারি একটি হিসাব বলছে, ২০২৩ সালে রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয় প্রায় ৭০ জনের। তবে বাজেট বিবৃতিতে উঠে এসেছে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে রাজ্য পদক্ষেপ করেছে। ডেঙ্গি পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২২ সালে ছিল ১৪৯। ২০২৩ সালে ১৯৭ করা হয়েছে। আর বাজেটে এই উদ্বেগ ও পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ কারিগর–তাঁতিদের আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা চন্দ্রিমার, নতুন প্রকল্পে সুরক্ষার বার্তা

এছাড়া এই বিষয়টি নিয়ে নানা মত রয়েছে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’–এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘ডেঙ্গি নোটিফায়েবল ডিজিস। তথ্য কেন্দ্রের পোর্টালে দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ তথ্য গোপন করে রাজ্য সরকার ভাল আছে প্রমাণের চেষ্টা করছে। এই প্রবণতায় জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে।’ এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’–এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে রাজ্য সরকার ডেঙ্গির বিষয়ে মিথ্যা বলেছিল সেটা আজ নিজেদের কথাতেই স্পষ্ট।’‌