মমতার আস্থার সুযোগ নিয়ে…, পার্থকে নিয়ে বললেন অভিষেক, বালুর বিষয়ে থাকলেন নরম

সম্প্রতি রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে একের পর এক বিভিন্ন দুর্নীতির খবর শিরোনামে উঠে এসেছে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, রেশন বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসক দলের নেতাদের। ইতিমধ্যেই এই সমস্ত দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন শাসক দলের তাবড়-তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ। তার এতদিন পর লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনাকে ‘কলঙ্কজনক অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিভিন্ন রাজ্যে টাকা উদ্ধারের ঘটনা সামনে এসেছে। তবে বাংলায় এর আগে এভাবে টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে বাংলার ক্ষেত্রে বিষয়টি নজরবিহীন বললেই চলে। সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল সক্রিয় বোঝাতে অভিষেক মনে করিয়ে দেন, পার্থের বিরুদ্ধে দল কীভাবে তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, কীভাবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে দলের তরফে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। 

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক তৃণমূল সেটাই চায়। সে কারণে টাকা উদ্ধারের ঘটনার পরেই দলের পদ থেকে পার্থকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রীর পদ থেকেও দ্রুততার সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক আস্থা ছিল। কিন্তু, তার সুযোগ নিয়ে যে এরকম কাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

অন্যদিকে, রেশন দুর্নীতিতে জেলে বন্দি রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। যদিও জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে এই ধরনের কোনও মন্তব্য করতে শোনা গেল না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করা হলেও এখনও তিনি বনমন্ত্রী হিসেবে রয়ে গিয়েছেন। পার্থর ক্ষেত্রে যেমন তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ করা হয়েছিল সেক্ষেত্রে জ্যোতিপ্রিয়র ক্ষেত্রে কেন করা হল না? 

সেই প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি, সিবিআইয়ের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ যে মন্ত্রী আছে কাল তিনি মধ্যে থাকবেন কিনা সেটা কেউ বলতে পারে না।’ তবে পার্থর ক্ষেত্রে যেমন সকলের সামনে টাকা উদ্ধারের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে জ্যোতিপ্রিয়র ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক সেরকম নয়। সেটা বোঝাতেই অভিষেক দাবি করেন তিনি এখনও দোষী প্রমাণিত হননি। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত নিয়ে তিনি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, সারদা মামলা এতদিন হয়ে যাওয়ার পরেও তদন্তের অগ্রগতি হয়নি। এখনও পর্যন্ত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়নি।