শৌচাগারের অব্যবস্থার অভিযোগ উঠল ত্রিবেণীর কুম্ভে, গঙ্গাপারেই মলত্যাগ করলেন সাধুরা

ত্রিবেণীতে কুম্ভমেলার আয়োজন হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সপ্তঋষি ঘাটে হবে ‘শাহি স্নান’। এই আবহে শৌচাগার নিয়ে মেলায় দুরবস্থার অভিযোগ তুলছেন সাধু–সন্ন্যাসীরা। কারণ এখানে শৌচকর্ম করতে অসুবিধায় পড়ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধু–সন্ন্যাসীরা। আরও সাধু এই আবহে আসতে শুরু করেন। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শৌচাগার না মেলায় গঙ্গাপারেই মলত্যাগ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ফলে ওই জায়গায় দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করেছে। ২০২৩ সালেও অব্যবস্থার একইরকম অভিযোগ তুলেছিলেন সাধুরা। শুধু তাই নয়, এখন যা পরিস্থিতি তাতে গঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় মল পড়ে আছে।

এদিকে এমন পরিস্থিতির কথা কানে গিয়েছে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার। তারা ব্যবস্থা নিতে চলেছে বলে খবর। বেশ কয়েকজন সাধু এই অব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘সকালে শৌচাগার খুঁজে পাইনি। তাই গঙ্গাপারে শৌচকর্ম সেরেছি। সাধুদের দিকে নজর নেই কর্তৃপক্ষের। কোথায় কী আছে সেসব কিছুই জানি না। সকালে তাই শৌচকর্মের জন্য গঙ্গাপারে গিয়েছি। আর পারের দিকে লোক ছিল। তাই জলে নেমে শৌচকর্ম সেরেছি।’ এই ঘটনা চাউর হতেই একদিকে যেমন হইচই পড়েছে অপরদিকে তেমন হাসির রোল উঠেছে। এখন কেউ গঙ্গাপারে যেতে পারছেন না দুর্গন্ধে।

অন্যদিকে ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতি সাধুদের এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। এই সমিতির মুখ্য সংগঠক সাধন মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, কুম্ভমেলা চত্বরে অনেকগুলি জৈব শৌচাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। কয়েকটি আবার স্থায়ী শৌচাগারও রয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৪০ হবেই। তাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সেক্ষেত্রে গঙ্গাপার কেন? সাধনবাবুর কথায়, ‘‌হতে পারে সাধুরা খুঁজে পাননি। স্বেচ্ছাসেবকদের বললেই দেখিয়ে দিত।’‌ এই পরিস্থিতিতে বাঁশবেড়িয়ার উপ–পুরপ্রধান শিল্পী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‌বাঁশবেড়িয়া পুরসভার কাছে জৈব শৌচাগার নেই সেটা মেলা কমিটিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কমিটি এসবের ব্যবস্থা করবে বলেছিল। গঙ্গাপারে শৌচকর্ম মেনে নেওয়া যায় না।’‌

আরও পড়ুন:‌ যাবজ্জীবন বন্দি দিদিকে মুক্তি দিতে কলকাতা হাইকোর্টে বোন, তারপর কী ঘটল?‌

এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এভাবে যত্রতত্র মলত্যাগ করলে তা থেকে দূষণ ছড়াবে। এমনকী অসুখ–বিসুখ করতে পারে। গঙ্গায় এই কাজের ফলে দূষিত হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে প্রশাসনের এখানে হস্তক্ষেপ করা উচিত। এখন ত্রিবেণী সাধুদের বসার জায়গা করা হয়েছে গঙ্গাপারে পরিত্যক্ত উদ্বাস্তু শিবির মাঠে। আর কুম্বমেলায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করেছে বাঁশবেড়িয়া পুরসভা ও একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০২৩ সালে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখেও এখানের কুম্ভমেলার কথা শোনা গিয়েছিল।