স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে খাবার তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা, দিশেহারা হকাররা

সম্প্রতি শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার নেতড়া স্টেশন লাগোয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এছাড়াও অতীতে আরও বেশ কিছু স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া, জনবহুল স্টেশনে যাত্রীদের গায়ে গরম খাবার ছিটকে পড়ার অভিযোগও প্রায়ই ওঠে। এই অবস্থায় বেআইনি হকার উচ্ছেদ করতে আগেই তৎপর হয়েছে রেল। আর এবার যাত্রী সুরক্ষায় আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করল রেল। সেক্ষেত্রে স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে কোনও রকমের খাবার তৈরি করা যাবে না। আর এই নির্দেশ না মানলে শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা হিসেবে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার পর্যন্ত করা হতে পারে।

আরও পড়ুন: রেললাইনে পড়ে গিয়েছিল হেডফোন, খুঁজতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু ২ বন্ধুর

পূর্ব রেলের তরফে জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেওসকার জানান, শুধুমাত্র বেআইনি স্টলেই নয়, রেলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্টলেও আগুন জ্বালিয়ে খাবার তৈরি করা যাবে না। যাত্রীদের ভিড় থাকা স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে খাবার রান্না করা বা তৈরি করা বিপজ্জনক হতে পারে। সেই কারণে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। শিয়ালদহ এবং হাওড়ার বিভিন্ন স্টেশন বিশেষ করে শহরতলির স্টেশনগুলিতে উপচে পড়া ভিড় থাকে। তবে এই সমস্ত স্টেশনগুলিতে ভিড়ের মধ্যেই চা, লুচি, ঘুগনি, তেলে ভাজা, ভাত রান্না করে বিক্রি করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। তবে অনেক সময় গরম তেল বা খাবার যাত্রীদের গায়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। হাওড়া স্টেশনের উত্তর দিকের সাবওয়েতে ঢোকার মুখে অনেক পুরি,সবজি বিক্রির স্টল অবৈধভাবে রয়েছে। তা থেকে যাত্রীদের গায়ে গরম তেল ছিটকে পড়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এই নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে নেটিজেনদের। আর এবার রেলের তরফে এই পদক্ষেপ করা হল।

যদিও এই পদক্ষেপে খুশি নন ব্যবসায়ীরা। তাদের বক্তব্য, খাবার বিক্রি করে তারা অর্থ উপার্জন করে থাকেন। সেক্ষেত্রে খাবার বিক্রি না হলে তারা চরম সমস্যায় পড়বেন। এই অবস্থায় বিকল্প আয়ের বন্দোবস্ত করার দাবি জানিয়েছেন দিশেহারা ব্যবসায়ীরা। প্রসঙ্গত, শহরতলির বেশ কিছু স্টেশনে প্রায়ই দেখা যায় প্যাসেঞ্জারদের দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট জায়গাটুকু নেই। তার কারণ প্রচুর দোকান বেআইনিভাবে স্টেশন ও প্লাটফর্ম চত্বরের মধ্যে গড়ে উঠেছে। এরফলে যাত্রীদের অপেক্ষা করার জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে যে ট্রেন যখন আসছে প্ল্যাটফর্মের ওই স্বল্প পরিসরের মধ্যে প্রচুর মানুষ একসঙ্গে কোনও রকমে ট্রেনে ওঠা, নামার চেষ্টা করছেন। তার ফলে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রীরা। অনেক ক্ষেত্রেই এরফলে দুর্ঘটনায় রূপান্তরিত হচ্ছে। তারপরেই রেলের তরফে হকার উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়।