Sundarban: প্রাণপণ লড়াই করেও ব্যর্থ বন্ধুরা, সন্দরবনে বাঘের হামলার মৃত্যু মৎস্যজীবীর

কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। রবিবার তিন সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের লাগোয়া নদী খাঁড়িতে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই সময় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বন্ধুরা বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির কাঁটামারির বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম প্রদীপ সর্দার (৪৫)।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবনের বেগি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় মাছ ও কাঁকড়া ধরছিলেন প্রদীপ। সেই হামলা চালায় বাঘটি। হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর ঘাড় কামড়ে ধরে। তার পর তাকে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জীবনের মায়া উপেক্ষা করে নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের উপ ঝাপিয়ে পড়ে তার দুই সঙ্গী। দীর্ঘক্ষণ লড়াই করে বাঘের সঙ্গে। সেই পর্যন্ত তাঁদের সাহসিকতার কাছে হার মানে বাঘ। প্রদীপ ফেলে রেখে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায় বাঘ।

এর পর তাঁরা প্রদীপকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি নৌকা করে গ্রামের দিকে রওনা দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রদীপকে বাঁচানো যায়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নৌকার মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর।

তাঁর দেহ নিয়ে রাত দশটা নাগাদ প্রদীপের বন্ধু কাঁটামারি গ্রামে হাজির হয়। খবর দেওয়া হয় কুলতলি থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পরিবারের মধ্যে একা উপার্জনকারী প্রদীপের স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কুলতলির গায়েন চক এলাকায় মৎসজীবী শ্রীদাম সর্দারের মৃত্যু হয় বাঘের আক্রমণে। রুজি রোজগারের জন্য মাছ ধরতে গভীর জঙ্গলে যাচ্ছেন মৎসজীবীরা। আর তাতেই বাড়ছে বিপদ। সরকারে থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হলেও তা মিলতে অনেক দেরি হয় বলে অভিযোগ।

বাঘের হামলায় মৃতের পরিবারের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সহ সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ দিতে কোনও রকম টালবাহানা চলবে না। আক্রান্ত ব্যক্তির ছেলেমেয়ের পড়াশুনার দায়িত্ব সরকার নিয়ে হবে। পরিবারের এক জনকে চাকরি দিতে হবে। ‘

হাই কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সুগভীর জঙ্গল হোক বা বাইরের এলাকা সুন্দরবনে বাঘের হামলায় কারও মৃত্যু হলেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সম্প্রতি একটি মামলায় এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এই নির্দেশ দিয়েছেন।