আধার কার্ড নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী

বেশ কিছুদিন ধরেই আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে পড়ছে নানা জেলায়। বাড়িতে চলে আসছে সেই মর্মে চিঠিও। বর্ধমান, নদিয়া–সহ নানা জেলায় এই চিঠি পেয়ে আতঙ্কিত মানুষজন। তাহলে কি বাংলা ছেড়ে বাংলাদেশে গিয়ে থাকতে হবে?‌ এমন সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই আবহে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাউকে ভয়, আতঙ্কিত হতে নিষেধ করেছেন তিনি। এমনকী আধার কার্ডের বিকল্প কার্ড রাজ্য সরকার দেবে বলে আজ, সোমবার নবান্ন থেকে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার উপর পোর্টাল খুলতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। আর এখানে থেমে না থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে আধার কার্ড নিয়ে বাংলায় যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে সেটা নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন। এরপরই এই চিঠি সামনে চলে আসে। এই আধার কার্ড বাতিল হয়েছে বেশিরভাগই সংখ্যালঘু, মতুয়া, তফসিলি জাতি–উপজাতির নাগরিকদের। এই নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। আধার বাতিল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি বিজেপির কারসাজি বলে অভিযোগ তুলেছে। আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুভেন্দু অধিকারী দাবি, আধার বাতিলের সমস্যা সমাধান দ্রুতই করে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠালেন। আর সেই চিঠিতে আবেদন করলেন, ‘‌এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুন।’‌ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই আধার বিড়ম্বনা তৈরির নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে গেলেও রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পের পরিষেবা পাবেন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঘটনা কি পরিকল্পিত?‌ এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অভিযোগ, ‘‌এটা সুকান্ত এবং শুভেন্দু যোগসাজশ করেই করেছেন। তা না হলে তাঁরা কেমন করে বলছেন কথা বলছি, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। এটা তো স্ববিরোধী মন্তব্য।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌মণিপুরের ঘটনার সঙ্গে সন্দেশখালিকে টানবেন না’‌, সুপ্রিম কোর্টে খারিজ সিবিআই তদন্তের দাবি

যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে মানুষের বিড়ম্বনা, বিভ্রান্তি এবং আতঙ্ক কাটাতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘‌আমি স্তম্ভিত। জানতে পেরেছি নয়াদিল্লির ইউআইডিএআই কোনও ফিল্ড এনকোয়ারি ছাড়া নোটিশ দিয়েছে। রাজ্যকে না জানিয়ে আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেশনের নোটিশ পাঠিয়েছে একাধিক বাড়িতে। আগাম না জানিয়ে কীভাবে এটা করা যেতে পারে অবাক লাগছে!‌ লোকসভা নির্বাচনের আগে এটা কি ভয়ের আবহ তৈরি করার জন্য করা হল? একটু সহমর্মিতার সঙ্গে দেখে সমাধানে হস্তক্ষেপ করুন।’‌ আর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌আধার কার্ড নিয়ে যাঁরা ছেলেখেলা করছেন, মানুষকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন, আঁধার জগতে মানুষ তাঁদের ফেলবে। গরিবদের বলব কোনও ভয় নেই, আমাদের জানান। বিকল্প কার্ড দেব আমরা। রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কাস্ট সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্যসাথী, সব পাবেন।’‌