বন্দুক নিয়ে MRI করতে গিয়ে হল মৃত্যু, আসল ঘটনাটা ঠিক কী?

এ যেন কোনও কল্প কাহিনীর থেকে কম কিছু নয়! নিজেকে রক্ষা করতে কটিবদ্ধ বন্দুক শেষমেশ প্রাণ নিল খোদ বন্দুকধারীর। ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং অর্থাৎ এমআরআই কক্ষে একটি লোডেড বন্দুক নিয়ে আসার পর ব্রাজিলের একজন আইনজীবীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সেদেশের সমাজমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত মাসে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। যখন আইনজীবী তার লোড করা লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি ল্যাবরেটরির এমআরআইয়ের স্ক্যানিং রুমে নিয়ে এসেছিলেন। মৃতের নাম লিয়েন্দ্রো ম্যাথিয়াস দে নোভাস। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। এদিকে ব্রাজিলের এই ঘটনা চাউর হতেই এক কথা হতভম্ব গোটা নেটপাড়া।

ঘটনাসূত্রে জানা গিয়েছে, ৪০ বছর বয়সী এই আইনজীবী একটি গোপন বন্দুক নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। এদিকে তার মায়ের সঙ্গে ল্যাবরেটরিও কুরা হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। এই অব্দি সব ঠিকই চলছিল। লিয়েন্দ্রো কোমরবন্ধের নিচে লুকিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি। এরপর এমআরআইয়ের ঘরে ঢোকার পর, যেই মেশিন চালু হয় সেখান থেকে চুম্বকীয় শক্তি শরীরে থাকা লৌহ-জাতীয় বস্তুদের আকর্ষণ করতে থাকে। সেই ফোর্সের জন্য বন্দুক পেট ক্ষতবিক্ষত করে তার শরীর থেকে বের হয়ে আসে।

দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পর, ল্যাবরেটরিও কুরা হাসপাতাল একটি অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ করেছে। মিয়ামি হেরাল্ডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘রোগী এবং তার মা উভয়কেই পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশের পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যেকোনও এবং সমস্ত ধাতব বস্তু অপসারণের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।’

হাসপাতাল প্রশাসনের অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আগ্নেয়াস্ত্রটি সঙ্গীর দ্বারা উল্লেখ করা হয়নি, যিনি তার স্বইচ্ছায় সেটিকে নিয়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন।’

দুর্ঘটনার পর, আইনজীবী নোভাসকে সাও লুইজ মুরুমবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসা করাও হয়। তবে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী ওই হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

লিয়েন্দ্রো নোভাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই আইনজীবী তার সোশ্যাল মাধ্যমে প্রায়শই বন্দুক দেখিয়ে নানান ভিডিয়ো বানাতেন। এবং পোস্টও করতেন। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে নোভাসের সোশ্যাল মাধ্যমে ৮ হাজারের বেশি ফলোয়ার রয়েছে।

বলাবাহুল্য, এমআরআই দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০১৮ সালে, একজন ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যক্তি একটি এমআরআই চেম্বারে আত্মহত্যা করেছিলেন। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছিল তিনি সেই ঘরে একটি ধাতব অক্সিজেন ট্যাঙ্ক সঙ্গে রেখেছিলেন।