‘মুখে নারীশক্তি বলেন, এবার করে দেখান’, কোস্টগার্ডে মহিলাদের স্থায়ী কমিশন না দেওয়ায় কেন্দ্রকে তুলোধোনা সুপ্রিম কোর্টের

মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশন না দেওয়ায় কেন্দ্র ও ভারতীয় কোস্টগার্ডের উপর ক্ষোভপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় কোস্টগার্ডের (উপকূলরক্ষী বাহিনী) এমন একটি নীতি তৈরি করা উচিত, যে নীতিতে মহিলাদের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে আচরণ করা হবে। রীতিমতো কড়া ভাষায় ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, ‘আপনারা নারীশক্তির কথা বলেন। এবার সেটা এখানে করে দেখান। এক্ষেত্রে আপনারা সমুদ্রের একেবারে কিনারায় আছেন। আপনাদের অতি অবশ্যই এমন নীতি তৈরি করতে হবে, যেখানে মহিলাদের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে আচরণ করা হবে।’

সোমবার যে মামলার প্রেক্ষিতে সেই কড়া মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট, সেই মামলা দায়ের করেছেন অফিসার প্রিয়াঙ্কা ত্যাগী। ‘শর্ট সার্ভিস কমিশন’-এ নিযুক্ত যে মহিলা অফিসাররা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, তাঁদের ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীতে ‘পার্মানেন্ট কমিশন’-র (স্থায়ী কমিশন) প্রদান করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

সেই আর্জির প্রেক্ষিতে সোমবার শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির (বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পাদ্রিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র) ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করে, ভারতের তিন সশস্ত্র বাহিনীতে (ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা এবং ভারতীয় নৌসেনা) মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশনের পক্ষে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরও কেন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর ক্ষেত্রে এরকম ‘পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব’ বজায় রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। 

আরও পড়ুন: India’s combat power strengthening: টর্পেডো, র‍্যাডার থেকে বিমান- ৮৪,৫৬০ কোটি টাকায় ‘অস্ত্রভাণ্ডার’ তুলে আনবে ভারত

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর আইনজীবী তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারল বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, ‘কেন আপনারা এত পুরুষতান্ত্রিক হয়ে আছে? আপনারা কি উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলাদের মুখ দেখতে চান না?’ সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে যে আবেদনকারী অফিসারই একমাত্র এসএসসি মহিলা অফিসার, যিনি স্থায়ী কমিশন পেতে চান এবং জানতে চেয়েছেন যে কেন তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।

তারইমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায় যে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনের কোনও বিধান আছে। সেই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয় যে মহিলা অফিসারদের ১০ শতাংশ স্থায়ী কমিশনের সুযোগ আছে। তখন শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে যে ‘কেন ১০ শতাংশ?….মহিলারা কি মানুষের থেকে কিছুটা কম?’ ভারতীয় নৌসেনা যখন মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশনের পথে হেঁটেছে, তখন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী কেন সেটা করছে না, তা জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।

আরও পড়ুন: First woman Subedar of the Indian Army: ভারতীয় সেনাতে প্রথম মহিলা সুবেদার, নারীশক্তির জয়গান