মিউনিখে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কনফারেন্সের ফাঁকে মুখোমুখি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তাঁদের ক্ষণিকের সেই সাক্ষাতের ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে নামছেন ওয়াং এবং সেই সময় মঞ্চে উঠতে যাচ্ছিলেন জয়শংকর। তখন দু’জনে হাসিমুখে হাত মেলান এবং স্বাভাবিক ভাবেই কিছুক্ষণ কথা বলেন। তবে দু’জনের কী কথা হয়েছিল, তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, মিউনিখের এই অনুষ্ঠানেই আমেরিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল জয়শংকরকে। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সেই জবাব শুনে মুচকি মুচকি হাসতে দেখা গিয়েছিল মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে। সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছিল। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ক্রমেই দৃঢ় হচ্ছে। তবে তাই বলে ‘পুরনো বন্ধু’ রাশিয়াকে ভুলে যায়নি দিল্লি। একই সঙ্গে আমেরিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের এই সখ্যতা অবাক করে বিশ্বের অনেক কূটনীতিককে। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়শংকর সেই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দুই দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাটা কী কোনও বাজে কথা নাকি? এটা সমস্যা কেন হবে? আমি যদি একাধিক পথ খোলা রাখার মতো স্মার্ট হয়ে থাকি, তাহলে তো আপনার উচিত আমার প্রশংসা করা। এটা তো অন্য কারও জন্যেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বর্তমানে বিশ্বে একমুখী সম্পর্ক বজায় রাখা কোনও দেশের পক্ষেই সম্ভব না।’ জয়শংকর যখন এই মন্তব্য করেন, তখন তাঁর পাশে বসে জার্মান বিদেশমন্ত্রী এবং মার্কিন বিদেশ সচিব। আর জয়শংকরের এই জবাব শুনে মুচকি হাসি দেখা যায় ব্লিনকেনের ঠোঁটে।
এদিকে মিউনিখে জয়শংকর এবং ব্লিনকেনের একান্ত বৈঠকও হয় এর আগে। ব্লিনকেন-জয়শংকর বৈঠর প্রসঙ্গে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সেক্রেটারি ব্লিনকেন। লোহিত সাগরে স্বাধীন ভাবে জাহাজের চলাচল নিশ্চিত করা নিয়ে দুই নেতার কথা হয়েছে। দু’জনেই মেনে নেন যে ভারত এবং আমেরিকা সেই অঞ্চলে যে পদক্ষেপ করছে তা সেখানকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
এদিকে মিউনিখের কনফারেন্সের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেন জয়শংকর। শনিবার এই সাক্ষাৎ হয়। হাসিনা পঞ্চমবারের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন জয়শংকর। গতকালকের বৈঠকের সময় হাসিনার সঙ্গী ছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদও। জানা গিয়েছে, দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে নানান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে শনিবারের বৈঠকে। তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বাণিজ্য ক্ষেত্রে রুপি-টাকার মাধ্যমে লেনদেন।